বিখ্যাত হলিউড অভিনেত্রী জোয়ান ক্রফোর্ডের সন্তানদের নিয়ে একটি জটিল পারিবারিক চিত্র আজও আলোচনার বিষয়। তাঁর চার সন্তানের মধ্যে তিনজনই ছিলেন দত্তক— ক্রিস্টিনা, ক্রিস্টোফার, ক্যাথি এবং সিন্ডি। এই সন্তানদের জীবন এবং মা হিসেবে ক্রফোর্ডের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে নানান বিতর্ক রয়েছে।
জোয়ান ক্রফোর্ড মোট চারবার বিয়ে করেছিলেন। তাঁর প্রথম স্বামী ছিলেন ডগলাস ফেয়ারব্যাঙ্কস জুনিয়র। এরপর ফ্রাঞ্চোট টোন, ফিলিপ টেরি এবং সবশেষে অ্যালবার্ট স্টিলকে বিয়ে করেন তিনি। তবে তাঁর সন্তানদের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন ছিল বেশ গভীর।
জোয়ানের দত্তক কন্যা ক্রিস্টিনা ক্রফোর্ড ১৯৭৮ সালে ‘মমmy ডিarest’ নামে একটি আত্মজীবনী প্রকাশ করেন, যেখানে তিনি মায়ের বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ আনেন। বইটি ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে এবং পরবর্তীতে ১৯৮১ সালে একই নামে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়। চলচ্চিত্রে ফে ডুনওয়ে ক্রফোর্ডের চরিত্রে অভিনয় করেন। ক্রিস্টিনার অভিযোগের বিপরীতে, ক্রফোর্ডের অন্য দুই কন্যা ক্যাথি এবং সিন্ডি তাঁদের মায়ের প্রতি ভালো এবং ভালোবাসাপূর্ণ আচরণের কথা বলেছেন।
ক্রিস্টিনা ক্রফোর্ড ১৯৩৯ সালের ১১ জুন জন্মগ্রহণ করেন। সিঙ্গেল মাদার হিসেবে ক্যালিফোর্নিয়াতে দত্তক নেওয়ার নিয়ম না থাকায় জোয়ান ক্রফোর্ড নেভাদাতে তাঁর দত্তক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। ক্রিস্টিনা নিজেও অভিনেত্রী ছিলেন। তিনি ব্রডওয়ের ‘বিয়ারফুট ইন দ্য পার্ক’, এলভিস প্রেসলির ‘ওয়াইল্ড ইন দ্য কান্ট্রি’ এবং ‘দ্য সিক্রেট স্টর্ম’ নামক টেলিভিশন ধারাবাহিকে কাজ করেছেন। মায়ের মৃত্যুর পর ক্রিস্টিনা তাঁর মায়ের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগগুলো নিয়ে মুখ খোলেন।
ক্রিস্টোফার ক্রফোর্ড ১৯৪৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ক্রফোর্ড ও তাঁর তৎকালীন স্বামী ফিলিপ টেরির মাধ্যমে দত্তক হন। ক্রিস্টোফার জনসাধারণের কাছে খুব একটা পরিচিত ছিলেন না। তাঁর ব্যক্তিগত জীবন ছিল নিভৃত। তবে ক্রিস্টিনার আত্মজীবনী প্রকাশের পর তিনি তাঁর বোনের পাশে ছিলেন। জানা যায়, ১৯৭৭ সালে জোয়ান ক্রফোর্ডের মৃত্যুর পর ক্রিস্টিনা ও ক্রিস্টোফার, দুজনেই তাঁদের উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন। পরে অবশ্য তাঁরা আদালতের মাধ্যমে কিছু অর্থ পান।
ক্যাথি ও সিন্ডি ক্রফোর্ড যমজ বোন ছিলেন এবং তাঁরা ১৯৪7 সালের ১৩ জানুয়ারি জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁদের মা জন্মের এক সপ্তাহ পরেই মারা যান এবং তাঁদের টেনেসির একটি শিশু-আবাসন থেকে দত্তক নেওয়া হয়। ক্যাথি তাঁর মায়ের সম্পর্কে ক্রিস্টিনার অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তাঁদের মা একজন ভালো মা ছিলেন। ক্যাথি পরবর্তীতে তাঁর পরিবারের সঙ্গে পুনরায় মিলিত হন।
সিন্ডি ক্রফোর্ডও তাঁর মায়ের প্রতি ভালোবাসার কথা জানিয়েছিলেন। তিনি বলেন, মা তাঁদের ভালোবেসেছেন এবং তাঁদের স্বাধীনভাবে বেড়ে উঠতে উৎসাহিত করেছেন। ১৯৮০-এর দশকে ‘মমmy ডিarest’ চলচ্চিত্রের মুক্তির পর সিন্ডি তাঁর মায়ের সম্পর্কে ইতিবাচক মন্তব্য করেন।
জোয়ান ক্রফোর্ডের সন্তানদের জীবন এবং তাঁদের মায়ের সঙ্গে সম্পর্কের এই জটিলতা আজও মানুষের মনে কৌতুহল জাগায়। তাঁদের এই ভিন্ন ভিন্ন অভিজ্ঞতাই এই পরিবারের গল্পকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।
তথ্য সূত্র: পিপল