যুক্তরাষ্ট্রের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, রবার্ট এফ. কেনেডি জুনিয়র, সম্প্রতি অটিজম (অটিজম) সম্পর্কে এমন কিছু মন্তব্য করেছেন যা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তাঁর মতে, কোভিড-১৯-এর চেয়েও বেশি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে অটিজম, কারণ কোভিড-১৯ মূলত বয়স্কদের আক্রান্ত করলেও অটিজম শিশুদের জীবনের শুরুতেই আঘাত হানে।
রবিবার, ২০শে এপ্রিল, একটি রেডিও সাক্ষাৎকারে কেনেডি জুনিয়র এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, অটিজম আক্রান্ত শিশুদের পরিবার, সমাজ এবং দেশের উপর বিশাল অর্থনৈতিক বোঝা তৈরি করে।
তাঁর ধারণা, ২০৩৫ সাল নাগাদ শুধু অটিজমের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে প্রতি বছর প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ লক্ষ ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি) ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। তবে তিনি এই হিসাবের উৎস সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
কেনেডি জুনিয়রের এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন অনেকে। তাদের মধ্যে রয়েছেন অটিজম বিশেষজ্ঞ এবং স্বনামধন্য ব্যক্তিরা। তাঁদের মতে, কেনেডির বক্তব্য অটিজম সম্পর্কে ভুল ধারণা তৈরি করে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টি করতে পারে।
অটিজম বিজ্ঞান ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট অ্যালিসন সিঙ্গার সিএনএন-কে বলেছেন, কেনেডির কথাগুলো এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যেন অটিজম আক্রান্ত ব্যক্তিদের জীবন মূল্যহীন।
অন্যদিকে, সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ৩১ জন শিশুর মধ্যে ১ জনের অটিজম ধরা পড়ছে। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অটিজমের সংখ্যা বাড়ছে এমনটা মনে করার কারণ নেই, বরং রোগ নির্ণয়ের উন্নত পদ্ধতির কারণে এখন বেশি সংখ্যক অটিজম শনাক্ত করা যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, অভিভাবকদের আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। তাঁরা মনে করেন, অটিজম কোনো মহামারী নয়।
বাংলাদেশেও অটিজম বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম চলছে। তবে এখানেও অনেক পরিবারে অটিজম সম্পর্কে ভুল ধারণা এবং কুসংস্কার বিদ্যমান।
এই ধরনের বিতর্কিত মন্তব্যগুলি জনস্বাস্থ্য এবং মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে আলোচনার সুযোগ তৈরি করে। একইসঙ্গে, অটিজম আক্রান্ত শিশুদের এবং তাদের পরিবারের জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি।
তথ্য সূত্র: পিপল