পোপ ফ্রান্সিস: ফুটবল প্রেমী এক ধর্মগুরু, ক্রীড়া জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র।
রোম (আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা) – ফুটবল ভালোবাসতেন, খেলোয়াড়দের উৎসাহিত করতেন, খেলাধুলার মাধ্যমে সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখতেন – এমন একজন মানুষ ছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। ৮৮ বছর বয়সে তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ ক্রীড়া জগৎ।
খেলাধুলার প্রতি তাঁর ভালোবাসার কারণে তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
পোপ ফ্রান্সিস শুধু একজন ধর্মগুরুই ছিলেন না, বরং খেলাধুলার প্রতি ছিল তাঁর গভীর অনুরাগ। বিশেষ করে, আর্জেন্টিনার ক্লাব সান লরেঞ্জোর প্রতি ছিল তাঁর বিশেষ দুর্বলতা।
২০১৩ সালে পোপ নির্বাচিত হওয়ার পরেই এই ক্লাবের প্রতি তাঁর ভালোবাসার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এমনকি তিনি ক্লাবটির সদস্যও ছিলেন, তাঁর সদস্যপদ নম্বর ছিল ৮৮,২৩৫।
পোপ ফ্রান্সিসের ফুটবল প্রীতি আর্জেন্টিনায় বেশ জনপ্রিয় ছিল। দিয়েগো ম্যারাডোনার সঙ্গে তাঁর একাধিকবার সাক্ষাৎ হয়েছে।
২০১৪ সালে একটি চ্যারিটি ফুটবল ম্যাচের সময় ম্যারাডোনা পোপকে একটি জার্সি উপহার দেন, যেখানে ‘ফ্রান্সিসকো’ (পোপের স্প্যানিশ নাম) লেখা ছিল এবং ম্যারাডোনার ১০ নম্বর জার্সি ছিল সেটি। ম্যারাডোনার প্রয়াণে তিনি গভীর শোক প্রকাশ করেছিলেন।
পোপ ফ্রান্সিস খেলোয়াড়দের সবসময় সমাজের জন্য ভালো কিছু করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, খেলোয়াড়রা তরুণ প্রজন্মের কাছে অনুকরণীয়।
তাই তাঁদের ভালো মানুষ হিসেবে সমাজে নিজেদের পরিচিত করতে হবে। ২০১৬ সালে খেলাধুলা বিষয়ক একটি সম্মেলনে তিনি ক্রীড়া কর্মকর্তাদের খেলাধুলায় দুর্নীতি রোধ করার আহ্বান জানান।
তাঁর প্রয়াণে ইতালির ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি গ্যাব্রিয়েল গ্রাভিনা শোক প্রকাশ করে বলেন, “পোপ ফ্রান্সিস ছিলেন খ্রিস্টান মমতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। খেলাধুলা এবং বিশেষ করে ফুটবলের প্রতি তাঁর আগ্রহ ছিল।
তিনি সবসময় আমাদের হৃদয়ে থাকবেন।”
পোপের প্রয়াণে ইতালিতে সোমবারের সব খেলা স্থগিত করা হয়। পরে সপ্তাহের অন্য খেলাগুলোতেও তাঁর প্রতি সম্মান জানিয়ে নীরবতা পালন করা হয়।
রিয়াল মাদ্রিদের মতো ক্লাবও তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে।
ফুটবলপ্রেমী হিসেবে পোপ ফ্রান্সিসের এই পরিচিতি বিশ্বজুড়ে ক্রীড়ামোদী মানুষের কাছে তাঁকে আরও বেশি প্রিয় করে তুলেছিল।
খেলাধুলার মাধ্যমে কিভাবে মানুষের মধ্যে ঐক্য ও ইতিবাচকতা আনা যায়, সে বিষয়ে তিনি ছিলেন সবসময় সোচ্চার।
তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা।