ক্রিকেট বিশ্বে, বিশেষ করে টেস্ট ফরম্যাটে, ওভার রেটের সমস্যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা চলছে। সম্প্রতি, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) এই বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অধিনায়ক বেন স্টোকস ওভার রেটের নিয়ম নিয়ে কিছু পরিবর্তনের আবেদন জানালেও, আইসিসি তা প্রত্যাখ্যান করেছে। ফলে, পুরনো নিয়মকানুন বহাল থাকছে, যা দলগুলোর জন্য জরিমানা এবং পয়েন্ট কাটার কারণ হবে।
**ওভার রেট বিষয়ক জটিলতা**
টেস্ট ম্যাচে একটি নির্দিষ্ট সময়ে কত ওভার বল করতে হবে, সেই হিসাব মেনেই চলে ওভার রেটের নিয়ম। কোনো দল যদি এই হারে বল করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তাদের জরিমানা করা হয় এবং বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ (ডব্লিউটিসি)-এর পয়েন্ট কাটা হয়।
এই নিয়ম নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন বেন স্টোকস। তাঁর মতে, এই নিয়ম সব ধরনের কন্ডিশনে খেলার ক্ষেত্রে দলগুলির উপর সমানভাবে প্রযোজ্য হওয়া উচিত নয়। বিশেষ করে, যে দলগুলি সিম-বান্ধব পরিবেশে বেশি খেলে, তাদের জন্য এটি আরও কঠিন হয়ে যায়।
**ইংল্যান্ডের উপর প্রভাব**
আগের ডব্লিউটিসি চক্রে ইংল্যান্ডের উপর এই নিয়মের বেশ প্রভাব পড়েছিল। স্লো ওভার রেটের কারণে তারা ২২ পয়েন্ট হারিয়েছিল। যদিও তাদের জয়ের হার ছিল বেশ ভালো, কিন্তু পয়েন্ট কাটার কারণে তারা ফাইনাল খেলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়।
শুধু ইংল্যান্ডই নয়, পাকিস্তান এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো দলগুলোও এই কারণে পয়েন্ট হারিয়েছিল।
ইংল্যান্ডের ক্রিকেট পরিচালক রবার্ট কী, আইসিসির কাছে এই নিয়মের কঠোরতা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন। তিনি যুক্তি দিয়েছিলে, এই নিয়ম ফাইনাল স্ট্যান্ডিংয়ের উপর বড় প্রভাব ফেলে। তবে, আইসিসি তাদের সিদ্ধান্তে অনড় ছিল।
**ভবিষ্যতের জন্য চিন্তা**
আইসিসির এই সিদ্ধান্তের ফলে আগামী দিনেও দলগুলোকে ওভার রেটের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ, নিয়ম অনুযায়ী প্রতি ঘণ্টায় ১৫ ওভার বল করতে ব্যর্থ হলে জরিমানা এবং পয়েন্ট কাটা হবে। এই নিয়ম ইংল্যান্ডের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে, কারণ তাদের আসন্ন সূচিতে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো কঠিন কন্ডিশনে টেস্ট সিরিজ রয়েছে, যেখানে সাধারণত স্পিনারদের ভূমিকা কম থাকে।
বেন স্টোকস মনে করেন, এই নিয়ম মাঠের কন্ডিশন এবং খেলোয়াড়দের কৌশলগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি করে। তাঁর মতে, অনেক সময় ফিল্ডিং সাজানো বা বোলার পরিবর্তনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোও সময়সাপেক্ষ হতে পারে, যা ওভার রেটের উপর প্রভাব ফেলে।
আসন্ন সময়ে, বিশেষ করে যখন ইংল্যান্ড দল বাংলাদেশে টেস্ট খেলতে আসবে, তখন এই বিষয়টি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। কারণ, বাংলাদেশের কন্ডিশনে স্পিন বোলিংয়ের প্রাধান্য থাকে, তবে এখানেও দলগুলোকে ওভার রেটের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান