যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতাদের একটি দল, বিতর্কিত পরিস্থিতিতে এল সালভাদরে আটক হওয়া কিলমার অ্যাব্রেগো গার্সিয়ার মুক্তির দাবিতে দেশটির উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছেন। গার্সিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে আনার জন্য দেশটির সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন তা মানতে রাজি নয়। এরই প্রেক্ষাপটে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রের চার জন ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতা—অ্যারিজোনার ইয়াসামিন আনসারি, ওরেগনের ম্যাক্সিন ডেক্সটার, ফ্লোরিডার ম্যাক্সওয়েল ফ্রস্ট এবং ক্যালিফোর্নিয়ার রবার্ট গার্সিয়া—এল সালভাদরে পৌঁছান। এর আগে গত সপ্তাহে মেরিল্যান্ডের সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেনও একই উদ্দেশ্যে সেখানে গিয়েছিলেন। আইনপ্রণেতারা অ্যাব্রেগো গার্সিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান।
উল্লেখ্যে, গার্সিয়া এক দশকের বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছিলেন, কিন্তু ১৫ই মার্চের এক অভিযানে তাকে আটক করা হয় এবং পরে বিতর্কিতভাবে এল সালভাদরে ফেরত পাঠানো হয়।
ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি ইয়াসামিন আনসারি সংবাদ সংস্থা এপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “গত কয়েক মাসে আমরা অনেক বেআইনি কাজ দেখেছি, তবে আমার মনে হয়, আমাদের গণতন্ত্রের ভবিষ্যতের জন্য এটি সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়।” জানা গেছে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা মঙ্গলবার সকালে এল সালভাদরের মার্কিন দূতাবাসে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিলিত হয়ে গার্সিয়ার মুক্তি এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে এল সালভাদরে পাঠানো অন্যান্য ব্যক্তিদের বিষয়ে আলোচনা করবেন।
এছাড়াও, তারা তাদের এল সালভাদর সফরের সময় কিছু গোপন ব্রিফিংও গ্রহণ করবেন।
এই ঘটনাটি ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের চলমান মতবিরোধের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট সরকারের প্রতি গার্সিয়াকে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিলেও বিচার বিভাগের আইনজীবীরা বলছেন, তাদের বিদেশি হেফাজতে থাকা কাউকে মুক্তি দেওয়ার ক্ষমতা নেই।
ক্যালিফোর্নিয়ার প্রতিনিধি রবার্ট গার্সিয়া বলেছেন, অ্যাব্রেগো গার্সিয়া ন্যায়বিচার পাওয়ার যোগ্য। তিনি বলেন, “তারা তাকে খাটো করার চেষ্টা করছে, কিন্তু আমরা এখানে তার পক্ষ নিতে আসিনি। প্রত্যেক মানুষেরই ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার আছে। তিনি কী করেছেন বা করেননি, তা বিচারক নির্ধারণ করবেন।”
আদালতের নথি অনুযায়ী, অ্যাব্রেগো গার্সিয়াকে এল সালভাদরে ফেরত পাঠানোর কারণ ছিল “প্রশাসনিক ত্রুটি”, যদিও ২০১৯ সালে একটি অভিবাসন বিষয়ক আদালত তাকে সুরক্ষার নির্দেশ দিয়েছিল। বর্তমানে তিনি দেশটির সন্ত্রাস দমন কেন্দ্রে (সিসোট) বন্দী রয়েছেন। এই কেন্দ্রটি রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের প্রশংসা পেলেও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সমালোচনার শিকার হয়েছে।
সাবেক হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট গার্সিয়ার ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেছেন, তিনি মানব পাচার ও সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি আরও জানান, যদি তাকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত আনা হয়, তবে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে পুনরায় বহিষ্কার করা হবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান