উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখলে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমানো যায়, নতুন গবেষণায় প্রমাণ। ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের পরামর্শ মেনে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখলে স্মৃতিভ্রংশ বা ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমে আসে, এমনটাই দেখা গেছে নতুন একটি গবেষণায়।
চীনের গ্রামীণ অঞ্চলের মানুষের উপর চালানো এই গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, ঔষধ সেবন এবং জীবনযাত্রায় পরিবর্তনের মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখলে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি ১৫ শতাংশ পর্যন্ত কমানো সম্ভব।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সারা বিশ্বে বর্তমানে প্রায় ৫ কোটি ৭০ লক্ষ মানুষ স্মৃতিভ্রংশে আক্রান্ত। বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্মৃতিভ্রংশ একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া নয়, বরং কিছু স্বাস্থ্য বিষয়ক ঝুঁকির কারণে এটি হতে পারে।
অতিরিক্ত ধূমপান, অতিরিক্ত মদ্যপান, কায়িক শ্রমের অভাব, কানের সমস্যা এবং সামাজিক সম্পর্ক থেকে দূরে থাকার মতো বিষয়গুলো ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। এই ঝুঁকিগুলোর মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ অন্যতম।
চীনের একটি গবেষণায়, ৪০ বছর বা তার বেশি বয়সের প্রায় ৩৪ হাজার মানুষের উপর এই পরীক্ষা চালানো হয়। এদের মধ্যে যাদের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ছিল না, তাদের দুটি দলে ভাগ করা হয়।
একটি দলকে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, বিনামূল্যে ঔষধ সরবরাহ এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শ দেওয়া হয়। অন্যদিকে, অন্য দলটিকে স্বাভাবিক চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করতে বলা হয়।
চার বছর পর, যারা নিবিড়ভাবে স্বাস্থ্য পরিষেবা পেয়েছেন, তাদের মধ্যে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে কম দেখা গেছে।
গবেষকরা বলছেন, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার ক্ষেত্রে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনাটা খুব জরুরি। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম এবং অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনা যেতে পারে।
এই গবেষণার ফলস্বরূপ, এখন বিশ্বজুড়ে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশেও উচ্চ রক্তচাপ একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা। এখানেও অনেকে স্মৃতিভ্রংশের ঝুঁকিতে রয়েছেন।
তাই, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে এবং স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করে এই ঝুঁকি কমানো সম্ভব। প্রত্যেক মানুষের উচিত, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান