পোপ ফ্রান্সিসের আফ্রিকা সফর: ক্যাথলিক চার্চের সঙ্গে সম্পর্ক নতুন দিশা।
ক্যাথলিক চার্চের ইতিহাসে পোপ ফ্রান্সিস এক উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি। তাঁর উদার নীতি এবং দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতি সহানুভূতির জন্য তিনি পরিচিত ছিলেন। আফ্রিকা মহাদেশে তাঁর বিভিন্ন সফর ক্যাথলিক চার্চের সঙ্গে এই মহাদেশের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করেছে। আফ্রিকা মহাদেশকে অনেক সময় “ক্যাথলিক চার্চের ভবিষ্যৎ” হিসেবেও উল্লেখ করা হয়, কারণ বিশ্বে প্রতি পাঁচ জন ক্যাথলিকের মধ্যে একজন আফ্রিকান।
পোপ ফ্রান্সিস তাঁর দায়িত্ব পালনকালে ১০টি আফ্রিকান দেশ সফর করেছেন। তাঁর পূর্বসূরিদের নেওয়া পদক্ষেপগুলিকেও তিনি আরও সুসংহত করেছেন। ষাটের দশকের আগে পোপরা খুব কমই ভ্যাটিকান ত্যাগ করতেন। কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুতো প্রয়াত পোপকে একজন “সেবক মানসিকতার নেতা” হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি ছিলেন “নম্র, অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়বিচারের প্রতি অবিচল এবং দরিদ্র ও দুর্বলদের প্রতি গভীর সহানুভূতিশীল”।
পোপ ফ্রান্সিসের আফ্রিকা সফরের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো:
পোপ ফ্রান্সিসের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সফরের মধ্যে ছিল:
পোপ ফ্রান্সিস আফ্রিকার বিভিন্ন বিশপ ও তাঁদের সংগঠনগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতেন। তবে, কিছু ক্ষেত্রে তাঁর নীতির কারণে সমালোচিতও হয়েছিলেন। বিশেষ করে, সমকামীদের আশীর্বাদ করার সিদ্ধান্তের কারণে অনেক আফ্রিকান বিশপ তাঁর বিরোধিতা করেন।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে পোপ সমকামী যুগলদের আশীর্বাদ করার অনুমতি দেন, যা চার্চের ইতিহাসে নজিরবিহীন ছিল। যদিও এই ধরনের আশীর্বাদ চার্চের নিয়মিত আচার-অনুষ্ঠানের অংশ হবে না এবং বিবাহবন্ধনের সঙ্গে একীভূত করা যাবে না। আফ্রিকার বিশপ অ্যাসোসিয়েশনগুলো এর তীব্র বিরোধিতা করে। তারা এই ধরনের সম্পর্ককে “অগ্রহণযোগ্য” বলে অভিহিত করে। এ ব্যাপারে ডিআরসি-র কার্ডিনাল ফ্রিডোলিন অ্যাম্বোঙ্গো’র নেতৃত্বে একটি বিবৃতিও প্রকাশ করা হয়।
এই বিতর্কের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে পোপ ফ্রান্সিস ইতালীয় সংবাদপত্র লা স্টাম্পাকে বলেছিলেন, তিনি যুগলদের আশীর্বাদ করেন, তাঁদের সম্পর্ককে নয়। তিনি আরও বলেন, “আমরা সবাই পাপী। তাহলে কেন চার্চে প্রবেশ করতে পারা পাপীদের তালিকা তৈরি করা হবে?”
আফ্রিকার সমালোচনার বিষয়ে পোপ ফ্রান্সিস তাঁদের উদ্বেগকে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “তাঁদের (আফ্রিকানদের) সংস্কৃতিগত দিক থেকে, সমকামিতা ‘খারাপ’, তাঁরা এটা সহ্য করে না।”
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা।