পোপ ফ্রান্সিসের সমাধিস্থল জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হওয়ার পর, রবিবার থেকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বীরা ভ্যাটিকানের সেন্টা মারিয়া মাজোরি ব্যাসিলিকায় (St. Mary Major Basilica) ভিড় জমাতে শুরু করেছেন। প্রয়াত পোপের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসা মানুষের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে সমাধিস্থলের বাইরে। শোকাহত ভক্তরা সারিবদ্ধভাবে সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন, তাদের চোখেমুখে ছিল গভীর শোকের ছায়া।
পোপ ফ্রান্সিসের সমাধিটি অত্যন্ত সাদাসিধেভাবে তৈরি করা হয়েছে। শ্বেত পাথরের ওপর ল্যাটিন ভাষায় খোদাই করা হয়েছে তাঁর নাম— ‘ফ্রান্সিসকাস’। সমাধির উপরে রাখা হয়েছে একটি সাদা গোলাপ। সমাধির উপরে তাঁর প্রতিকৃতি এবং ক্রস স্থাপন করা হয়েছে, যা তাঁর সাধাসিধে জীবনের প্রতিচ্ছবি।
অনেকে ছবি তুলছেন, আবার কেউ নীরবে প্রার্থনা করছেন। সেখানকার কর্মীরা আসা-যাওয়ার সুবিধার জন্য ভক্তদের দ্রুত স্থান ত্যাগ করতে অনুরোধ করছেন।
ইতালির রাজধানী রোমে বসবাসকারী এলিয়াস কারাভালহাল জানান, পোপ ফ্রান্সিস ছিলেন তাঁর কাছে একজন “অনুপ্রেরণা ও পথপ্রদর্শক”। তিনি বলেন, “পোপের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পেরে আমি আনন্দিত। তাঁর কাজগুলো আমাকে সবসময় অনুপ্রাণিত করে।”
গত ইস্টার সানডেতে সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় (St. Peter’s Basilica) পোপের শেষকৃত্যানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি ও কয়েক লক্ষ সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
পোপ ফ্রান্সিস তাঁর অন্তিম শয়ানের জন্য সেন্টা মারিয়া মাজোরি ব্যাসিলিকাকে বেছে নিয়েছিলেন। এই ব্যাসিলিকার কাছেই রয়েছে একটি মাদার মারিয়ারIcon, যাকে তিনি গভীর শ্রদ্ধা করতেন। এখানকার আর্চবিশপ জানান, পোপের “সরল ও অনাড়ম্বর” জীবনকে প্রতিফলিত করতেই তিনি এই স্থান নির্বাচন করেছিলেন।
এদিকে, ভ্যাটিকানে পোপের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার শোক পালনের দ্বিতীয় দিনে, সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে একটি বিশেষ প্রার্থনা সভার আয়োজন করা হয়। এই সভায় নেতৃত্ব দেন কার্ডিনাল পিয়েত্রো পারোলিন। তিনি পরবর্তী পোপ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছেন।
পোপ নির্বাচনের জন্য আগামী ১০ই মের মধ্যে একটি কনক্লেভ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই কনক্লেভে নতুন পোপ নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হবে। খবর অনুযায়ী, পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে আসা কার্ডিনালরা এরই মধ্যে বৈঠক শুরু করেছেন।
তাঁরা ১.৪ বিলিয়ন ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বীর জন্য একটি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তৈরি করছেন।
ভারতে বসবাসকারী সুসমিদা মারফি, যিনি ইতালি ভ্রমণে এসে এই সমাধিস্থলে গিয়েছিলেন, তিনি বলেন, “এটা বিশ্বাস করা কঠিন যে তিনি আর আমাদের মাঝে নেই। এমন একজন পোপকে আমরা খুব কমই পাই।”
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস