টাইটানিক জাহাজের যাত্রী কর্নেল আর্চিবাল্ড গ্রেসির একটি চিঠি সম্প্রতি নিলামে বিপুল দামে বিক্রি হয়েছে। জাহাজটি ডুবির কয়েক দিন আগে লেখা এই চিঠিতে যেন লুকিয়ে ছিল এক গভীর ভবিষ্যদ্বাণী, যা আকৃষ্ট করেছে বিশ্বজুড়ে থাকা ইতিহাস প্রেমীদের।
নিলামে চিঠিটির দাম উঠেছে প্রায় চার লক্ষ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪ কোটি টাকার সমান।
ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী এই চিঠি লেখা হয়েছিল ১৯১২ সালের ১০ এপ্রিল। টাইটানিক যখন সাউদাম্পটন থেকে নিউ ইয়র্কের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে, সেই সময়েই গ্রেসির কলম ধরেছিলেন।
এর কয়েক দিন পরেই আটলান্টিক মহাসাগরে এক ভয়ানক দুর্ঘটনার শিকার হয় টাইটানিক। বরফের স্তূপের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডুবে যায় বিশাল এই জাহাজ, কেড়ে নেয় ১৫০০ এর বেশি মানুষের প্রাণ।
চিঠিতে কর্নেল গ্রাসি তাঁর এক পরিচিত ব্যক্তিকে লিখেছিলেন, “জাহাজটি সুন্দর, তবে আমি এর গন্তব্যের জন্য অপেক্ষা করব এবং তারপর এর সম্পর্কে মন্তব্য করব।” এই একটি বাক্যেই যেন লুকিয়ে ছিল সেই ট্র্যাজেডির পূর্বাভাস।
নিলামে অংশগ্রহণকারী বিশেষজ্ঞরাও জানিয়েছেন, গ্রেসির এই চিঠিটি ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং দুর্লভ।
আর্চিবাল্ড গ্রাসি ছিলেন টাইটানিকের প্রথম শ্রেণির যাত্রী এবং সেই দুর্ঘটনায় সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া কয়েকজনের মধ্যে তিনি অন্যতম। দুর্ঘটনার পর তিনি ‘দ্য ট্রুথ অ্যাবাউট দ্য টাইটানিক’ নামে একটি বই লেখেন, যেখানে টাইটানিক বিপর্যয়ের মর্মান্তিক অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছিলেন।
১৯১২ সালের ডিসেম্বরে অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগা ও অন্যান্য শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাঁর মৃত্যু হয়।
ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে টাইটানিকের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন জিনিস প্রায়ই নিলামে বিপুল দামে বিক্রি হয়।
এর আগে টাইটানিকের ক্যাপ্টেনকে দেওয়া একটি সোনার পকেট ঘড়ি এবং ১৯৯৭ সালের ‘টাইটানিক’ ছবিতে ব্যবহৃত একটি কাঠের টুকরোর নিলামও বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।
লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও এবং কেট উইন্সলেট অভিনীত সিনেমাটির সেই কাঠের টুকরোটি প্রায় ৭ লক্ষ ১৮ হাজার ৭৫০ ডলারে বিক্রি হয়েছিল।
তথ্যসূত্র: পিপল