বর্তমান বিশ্বে, সাহিত্য এবং ভিডিও গেমের জগৎ যেন একে অপরের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। অনেক ঔপন্যাসিক এখন ভিডিও গেমের গল্প লিখছেন, আবার গেমের লেখকেরা ঝুঁকছেন উপন্যাসের দিকে।
এই পরিবর্তনের কারণ কী? লেখকদের এই নতুন পথচলার গল্প নিয়ে আজকের এই প্রতিবেদন।
লেখকদের জন্য আর্থিক নিরাপত্তা সব সময়ই একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বই লিখে জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন, বিশেষ করে যখন সামান্য রয়্যালটির ওপর নির্ভর করতে হয়।
সম্প্রতি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, লেখকদের গড় আয় খুবই কম। এই কারণে, অনেক লেখক এখন ভিডিও গেমের জগতে কাজ করছেন, যেখানে তুলনামূলকভাবে ভালো আয়ের সুযোগ রয়েছে।
অন্যদিকে, গেমের জগতেও লেখকের চাহিদা বাড়ছে। গেমের গল্প লেখার কাজটিও বেশ কঠিন।
অনেক সময় লেখকদের এমন সব গল্প লিখতে হয় যা খেলোয়াড়রা নাও পড়তে পারে।
গেমের জগতে, লেখকের কাজ অনেক বেশি দলবদ্ধভাবে করার প্রয়োজন হয়, যা কিছু লেখকের কাছে একঘেয়ে লাগতে পারে।
তাই, অনেকে উপন্যাস লেখার দিকে ঝুঁকছেন, যেখানে তারা নিজের মতো করে কাজ করতে পারেন।
গেম এবং বই, উভয় মাধ্যমেই গল্প বলার ভিন্নতা রয়েছে। উপন্যাসে, লেখকের স্বাধীনতা বেশি থাকে।
তারা চরিত্রের গভীরতা ফুটিয়ে তুলতে পারেন এবং ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিতে পারেন।
অন্যদিকে, গেমে খেলোয়াড়ের অংশগ্রহণের সুযোগ থাকে। খেলোয়াড় নিজের ইচ্ছামতো গল্পে পরিবর্তন আনতে পারে।
অনেক লেখক মনে করেন, বইয়ের তুলনায় গেমের সংস্কৃতিগত অবস্থান কিছুটা দুর্বল।
বইকে সমাজে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।
কিন্তু গেমের জগৎ এখনো তরুণ এবং এখানে নতুনত্বের সুযোগ অনেক বেশি।
লেখকেরা তাই এই নতুন মাধ্যমে কাজ করতে আগ্রহী হচ্ছেন, যেখানে তারা প্রচলিত ধ্যান-ধারণা ভেঙে নতুন কিছু তৈরি করতে পারেন।
যারা এই দুটি মাধ্যমেই কাজ করেন, তাদের অভিজ্ঞতা মিশ্র। কেউ কেউ বলেন, গেমের জগতে কাজ করার সময় অনেক বেশি মানুষের সঙ্গে কাজ করতে হয়, যা তাদের ভালো লাগে।
আবার কেউ কেউ মনে করেন, উপন্যাসে নিজের মতো করে কাজ করার স্বাধীনতা অনেক বেশি।
নতুন প্রজন্মের লেখকেরা গেম এবং বই—দুটোই উপভোগ করেন। তারা একটি মাধ্যম থেকে অন্য মাধ্যমে স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে পারেন।
তাদের কাছে কোনটি ভালো বা খারাপ, এমন কোনো বিভাজন নেই।
গেম এবং বইয়ের এই পারস্পরিক আদান-প্রদান ভবিষ্যতের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে।
লেখকেরা এখন গল্প বলার চিরাচরিত পদ্ধতির বাইরে এসে নতুন কিছু চেষ্টা করছেন, যা আমাদের বিনোদনের জগৎকে আরও সমৃদ্ধ করবে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান