অস্ট্রেলিয়ার আদালতে এক চাঞ্চল্যকর মামলার শুনানি চলছে, যেখানে এরিন প্যাটারসন নামের এক নারীর বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগ, তিনি তার শ্বশুর-শাশুড়ি এবং এক আত্মীয়কে বিষাক্ত মাশরুম খাইয়ে হত্যা করেছেন। এই ঘটনায় পুরো অস্ট্রেলিয়া জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
২০২৩ সালের জুলাই মাসের শেষের দিকে, এরিন তার প্রাক্তন স্বামীর পরিবারের কয়েকজন সদস্যকে রাতের খাবারের জন্য আমন্ত্রণ জানান। আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে ছিলেন তার শাশুড়ি গেইল প্যাটারসন, শ্বশুর ডোনাল্ড প্যাটারসন এবং গেইলের বোন হেদার উইলকিনসন। এছাড়াও হেদারের স্বামী ইয়ান উইলকিনসনও সেই রাতের খাবারে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু খাবার খাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েন।
হাসপাতালে নেওয়ার পর গেইল, ডোনাল্ড এবং হেদারের মৃত্যু হয়। ইয়ান উইলকিনসন গুরুতর অসুস্থ হলেও সৌভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে যান।
অভিযোগ উঠেছে, এরিন প্যাটারসন ইচ্ছাকৃতভাবে তার অতিথিদের ডেথ ক্যাপ মাশরুম পরিবেশন করেছিলেন, যা অত্যন্ত বিষাক্ত। সরকারি কৌঁসুলিরা আদালতে প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন যে, এরিন পূর্ব পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। অন্যদিকে, এরিনের আইনজীবীরা দাবি করছেন, এটি একটি ভয়ানক দুর্ঘটনা ছিল। তারা বলছেন, এরিন কোনোভাবেই তাদের ক্ষতি করতে চাননি।
শুরুতে এরিন পুলিশের কাছে মিথ্যা তথ্য দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তিনি মাশরুম সংগ্রহ করেননি এবং তার কাছে ডিহাইড্রেটরও নেই। তবে, পরে জানা যায়, তিনি মাশরুম সংগ্রহ করেছিলেন এবং তার কাছে ডিহাইড্রেটরও ছিল। আদালতে শুনানিতে এরিনের আইনজীবী জানান, অতিথিদের অসুস্থতা দেখে তিনি “আতঙ্কিত” হয়ে পড়েছিলেন, যে কারণে তিনি এমনটা করেছিলেন।
শুনানিতে আরও জানা যায়, এরিন তার শ্বশুরবাড়ির লোকেদের জানিয়েছিলেন যে, তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত। খাবারের সময় তিনি নাকি তাদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, কীভাবে তার সন্তানদের এই খবর দেবেন। তবে, সরকারি কৌঁসুলিরা বলছেন, এরিন আসলে মিথ্যা কথা বলেছিলেন এবং ক্যান্সারের কথা বলে তিনি তার প্রাক্তন স্বামীর সন্তানদের সেই দিনের খাবার থেকে দূরে রাখতে চেয়েছিলেন।
এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া এখনো চলছে এবং এটি প্রায় ছয় সপ্তাহ পর্যন্ত চলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরিন প্যাটারসন তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তথ্যসূত্র: সিএনএন।