ডিফাগার্ডেন: অচেনা সুইডিশ দলটির রূপকথা, যাদের সামনে এখন চেলসি। ইউরোপীয় ফুটবলে প্রায়ই অঘটন ঘটে।
অপেক্ষাকৃত দুর্বল দলগুলো শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে হারিয়ে চমক সৃষ্টি করে। তেমনই এক রূপকথার জন্ম দিয়েছে সুইডেনের ক্লাব ডিফাগার্ডেন।
সম্প্রতি তারা ইউরোপিয়ান কনফারেন্স লিগের সেমিফাইনালে উঠেছে, যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে রয়েছে ইংলিশ ক্লাব চেলসি। ফুটবল বিশ্বে যাদের যথেষ্ট পরিচিতি রয়েছে।
সুইডেনের ক্লাবটি এতটা পথ পাড়ি দেবে, তা হয়তো অনেকেই আশা করেনি। তাদের এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে দৃঢ় মনোবল, কৌশল এবং খেলোয়াড়দের অসাধারণ পারফরম্যান্স।
মাঝমাঠে কেইতা কোসুগি এবং ফরোয়ার্ডে টোবিয়াস গুলিকসেনের মতো খেলোয়াড়রা দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তবে, তাদের পথটা সহজ ছিল না।
ইনজুরি এবং ক্লাবের অভ্যন্তরীণ কিছু সমস্যা তাদের ভুগিয়েছে। তা সত্ত্বেও, সেমিফাইনালে ভালো খেলার ব্যাপারে তারা আত্মবিশ্বাসী।
আসলে, ডিফাগার্ডেন এবং চেলসির মধ্যে তুলনা করলে আকাশ-পাতাল তফাৎ চোখে পড়ে। মাঠের পারফরম্যান্সের বাইরেও, ক্লাব দুটির আর্থিক সামর্থ্যেও বিশাল পার্থক্য রয়েছে।
ডিফাগার্ডেনের পুরো দলের বাজারমূল্য যেখানে প্রায় ১৮ মিলিয়ন পাউন্ড, সেখানে চেলসির একজন খেলোয়াড়ের দামও এর চেয়ে বেশি হতে পারে। এই আর্থিক বৈষম্যই কনফারেন্স লিগের আকর্ষণ বাড়িয়েছে।
এটি ছোট দলগুলোকে ইউরোপের মঞ্চে নিজেদের প্রমাণ করার সুযোগ করে দিয়েছে। ডিফাগার্ডেন তাদের এই সাফল্যের মাধ্যমে প্রায় ১০ মিলিয়ন পাউন্ড আয়ের সম্ভাবনা তৈরি করেছে, যা তাদের জন্য বিশাল পাওয়া।
ডিফাগার্ডেনের এই যাত্রা শুরু হয়েছিল গত বছরের জুলাই মাসে। এরপর তারা বাছাইপর্ব পেরিয়ে গ্রুপ পর্বে আসে এবং সেখানেও ভালো ফল করে।
এর আগে, তারা টটেনহ্যামের কাছে ৮.৫ মিলিয়ন পাউন্ডে তাদের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় লুকাস বার্গভালকে বিক্রি করে দেয়।
চেলসির বিপক্ষে প্রথম লেগের ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে স্টকহোমের ৩আ্যরেনা স্টেডিয়ামে, যেখানে প্রচুর দর্শকের সমাগম হবে আশা করা হচ্ছে।
জাপানি ডিফেন্ডার কেইতা কোসুগি বলেছেন, “আমরা বিশ্বাস করি, আমরা জিততে পারি।” কোচ ইয়ানি হোনকাভারাও বেশ আশাবাদী।
তিনি বলেন, “আমাদের সেরাটা খেলতে হবে এবং সাহসী হতে হবে।” তবে, হোনকাভারার জন্য কিছু সমস্যাও রয়েছে।
দলের বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় ইনজুরির কারণে বাইরে আছেন। মাঝমাঠের দুই খেলোয়াড়, আলবিন একডাল এবং ম্যাতিয়াস সিলটানেনকে কনফারেন্স লিগের স্কোয়াডে নিবন্ধন করা হয়নি।
ফলে, প্রথম লেগের ম্যাচে তার হাতে মাত্র ১৪ জন খেলোয়াড় রয়েছে। তবে মাঠের লড়াইয়ে নামার আগে, ক্লাবটিকে মাঠের বাইরের একটি সমস্যাও সামলাতে হয়েছে।
বর্ণবাদী মন্তব্য করার কারণে ক্লাবের চেয়ারম্যানকে পদত্যাগ করতে হয়। এখন দেখার বিষয়, এত প্রতিকূলতার মধ্যে ডিফাগার্ডেন কিভাবে চেলসির মতো শক্তিশালী দলের মোকাবেলা করে।
ডিফাগার্ডেনের খেলোয়াড়দের মধ্যে কেইতা কোসুগি এবং টোবিয়াস গুলিকসেনের দিকে সবার নজর থাকবে। কোসুগি একজন অসাধারণ খেলোয়াড়, যিনি আক্রমণ এবং রক্ষণ উভয় দিকেই সমান দক্ষ।
অন্যদিকে, গুলিকসেনের গোল করার ক্ষমতা যেকোনো প্রতিপক্ষের জন্য ভয়ের কারণ। চেলসিকে হারাতে হলে ডিফাগার্ডেনকে নিজেদের সেরাটা দিতে হবে।
তাদের কোচ ইয়ানি হোনকাভারা বলেছেন, “আমাদের দলের আর্থিক সামর্থ্যের দিকে মনোযোগ না দিয়ে, মাঠে নিজেদের খেলা উপভোগ করতে হবে।” আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সূত্রে খবর।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সূত্রে খবর।