মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি সম্প্রচার মাধ্যমগুলির অর্থায়ন বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই সিদ্ধান্তের জেরে ন্যাশনাল পাবলিক রেডিও (এনপিআর) এবং পাবলিক ব্রডকাস্টিং সার্ভিসেস (পিবিএস)-এর ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (গতকাল) স্বাক্ষরিত এক নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প কর্পোরেশন ফর পাবলিক ব্রডকাস্টিং-কে (সিপিবি) এই দুটি মাধ্যমের জন্য ফেডারেল তহবিল বন্ধ করার নির্দেশ দেন।
হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, এনপিআর ও পিবিএস-এর সংবাদ পরিবেশনায় পক্ষপাতিত্ব রয়েছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই মূলত ট্রাম্প এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
নির্বাহী আদেশে সিপিবি’র পরিচালনা পর্ষদকে এনপিআর ও পিবিএস-এর জন্য সরাসরি অর্থায়ন বন্ধ করার কথা বলা হয়েছে। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে তাদের কোনো প্রকার তহবিল দিতেও অস্বীকৃতি জানাতে বলা হয়েছে।
শুধু তাই নয়, এনপিআর এবং পিবিএস-কে দেওয়া পরোক্ষ তহবিল ‘হ্রাস’ করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদেশে স্বাস্থ্য ও মানব পরিষেবা সচিব রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়রকে এনপিআর এবং পিবিএস-এর বিরুদ্ধে সম্ভাব্য কর্মসংস্থান বৈষম্যের অভিযোগ তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, অন্যান্য ফেডারেল সংস্থা প্রধানদেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা এই গণমাধ্যম সংস্থাগুলির জন্য কোনো প্রকার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ তহবিল প্রদান করা হলে, তা বন্ধ করে দেন।
প্রতি বছর, সিপিবি প্রায় ৫৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সরকারি অর্থ পাবলিক রেডিও এবং টিভি স্টেশনগুলোতে বিতরণ করে। এই স্টেশনগুলো শিক্ষা বিষয়ক অনুষ্ঠান, জরুরিAlert এবং সংবাদ ও সাংস্কৃতিক বিভিন্ন কনটেন্ট বিনামূল্যে পরিবেশন করে।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের ফলে স্থানীয় অনেক স্টেশন বন্ধ হয়ে যেতে পারে, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকাগুলোতে, যেখানে এই ধরনের গণমাধ্যমগুলি স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
আগের সপ্তাহে, সিপিবি ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে, কারণ তাদের পরিচালনা পর্ষদের পাঁচ সদস্যের মধ্যে তিনজনকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। এই বরখাস্ত হওয়া সদস্যরা হলেন- লরা জি রস, থমাস ই রথম্যান এবং ডায়ানে ক্যাপলান।
এদেরকে মূলত ২০২০ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিয়োগ করেছিলেন।
১৯৬৭ সালে পাশ হওয়া একটি আইনে সিপিবি-কে একটি বেসরকারি সংস্থা হিসেবে তৈরি করা হয়েছিল, যাতে সরকারি হস্তক্ষেপ থেকে সম্প্রচার মাধ্যমগুলিকে সুরক্ষিত রাখা যায়। ওই আইনে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সরকার শিক্ষা বিষয়ক টেলিভিশন বা রেডিও সম্প্রচারের ওপর কোনো প্রকার নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না।
এই ঘটনার জেরে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সরকারি অর্থায়নের বিষয়টি নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন