শিরোনাম: প্রশাসনিক কাজে এআই ব্যবহারের ফলে কর্মীদের বছরে ১২২ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় বাঁচতে পারে, গুগলের গবেষণা
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বাড়ছে। উন্নত দেশগুলোতে কর্মক্ষেত্রে এর প্রয়োগ কিভাবে উৎপাদনশীলতা বাড়াচ্ছে, সম্প্রতি গুগল তার একটি গবেষণায় তা তুলে ধরেছে।
এই গবেষণায় জানা গেছে, যুক্তরাজ্যের কর্মীরা প্রশাসনিক কাজগুলোতে এআই ব্যবহার করে বছরে গড়ে প্রায় ১২২ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় বাঁচাতে পারে।
গুগল-এর এই গবেষণা অনুসারে, কর্মীদের এআই ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া এবং তাদের প্রশিক্ষণ প্রদানের মতো সহজ পদক্ষেপের মাধ্যমেই নতুন প্রযুক্তি গ্রহণের হার দ্বিগুণ করা সম্ভব। এর ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও বাড়বে।
এই পাইলট প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে গুগল ‘এআই ওয়ার্কস’ নামে একটি প্রকল্প পরিচালনা করে। এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে, কর্মীদের মধ্যে যারা আগে জেনারেটিভ এআই ব্যবহার করেননি, তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। বিশেষ করে, যাদের মধ্যে প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ কম, যেমন– বয়স্ক নারী এবং নিম্ন আর্থ-সামাজিক শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত কর্মীদের ওপর এই প্রশিক্ষণ বেশি কার্যকর হয়েছে।
গুগলের ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট ডেবি ওয়েইনস্টাইন বলেছেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে কর্মীদের মধ্যে এআই ব্যবহারের দ্বিধা দূর করা গেছে। কর্মীদের মনে প্রায়ই প্রশ্ন ছিল, ‘আমি কি এটা করতে পারি?’ তাদের এই দ্বিধা দূর করতে পারাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
প্রশিক্ষণ পাওয়ার পর কর্মীরা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে আরও বেশি আগ্রহী হয়েছেন এবং নিয়মিতভাবে কাজ করছেন। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রশিক্ষণ শুরুর আগে, ৫৫ বছরের বেশি বয়সী নারীদের মধ্যে মাত্র ১৭ শতাংশ কর্মী সপ্তাহে এআই ব্যবহার করতেন এবং মাত্র ৯ শতাংশ করতেন প্রতিদিন।
প্রশিক্ষণের তিন মাস পর, ৫৬ শতাংশ কর্মী এখন সপ্তাহে এআই ব্যবহার করছেন এবং ২৯ শতাংশের কাছে এটি দৈনন্দিন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
গবেষণায় আরও উঠে এসেছে, এআই ব্যবহারের ফলে কর্মীদের কাজ আরও সহজ হয়েছে এবং তাদের কর্মদক্ষতা বেড়েছে।
এই পরিবর্তনের ফলে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে প্রায় ৫৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৫৯ লক্ষ কোটি টাকার বেশি) বৃদ্ধি হতে পারে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যদি আমরা দেখি, তাহলে এআই ব্যবহারের সম্ভাবনা এখানেও অনেক। তবে, এর জন্য প্রয়োজন কর্মীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ এবং প্রযুক্তি ব্যবহারের সঠিক পরিবেশ তৈরি করা।
সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিত পদক্ষেপের মাধ্যমে এআই-এর সুবিধাগুলো কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আরও দ্রুত বাড়ানো সম্ভব।
তথ্য সূত্র: সিএনএন