যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। লেবার পার্টির প্রভাবশালী নেতা, ওয়েস স্ট্রিটিং সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন যে, নাইজেল ফ্যারেজের নেতৃত্বাধীন ‘রিফর্ম ইউকে’ দলটি এখন ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে।
স্থানীয় নির্বাচনে দলটির উল্লেখযোগ্য সাফল্যের প্রেক্ষাপটে স্ট্রিটিং এই মন্তব্য করেন।
সাম্প্রতিক স্থানীয় নির্বাচনে রিফর্ম ইউকে’র উত্থান ছিল চোখে পড়ার মতো। দলটি বেশ কয়েকটি আসনে জয়লাভ করে এবং ১০টি কাউন্সিলে তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে।
এর ফলে তারা একদিকে যেমন কনজারভেটিভ পার্টির আসন কেড়ে নিয়েছে, তেমনি লেবার পার্টিরও কিছু ক্ষতি হয়েছে।
স্ট্রিটিং বিবিসি’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “পরিস্থিতি পরিবর্তনে সময় লাগে। আমরা বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি এবং জনগণের কাছে আরও সময় চাইছি।”
তিনি আরও যোগ করেন, আগামী নির্বাচনে যদি জনগণের মধ্যে পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা দেখা দেয়, তবে এর মোকাবিলায় সরকার আরও দ্রুত পদক্ষেপ নেবে।
অন্যদিকে, স্কাই নিউজে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্ট্রিটিং স্পষ্ট করেন যে রিফর্ম ইউকে’কে তারা একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ প্রতিপক্ষ’ হিসেবে দেখছেন।
তিনি বলেন, “যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে ডানপন্থী দলগুলোর মধ্যে একটি নতুন মেরুকরণ হচ্ছে। আগামী নির্বাচনে লেবার পার্টির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে কনজারভেটিভ পার্টি নাকি রিফর্ম ইউকে আসবে, তা এখনো বলা যাচ্ছে না।
তবে এই বিষয়টিকে আমাদের গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে।”
স্ট্রিটিং আরও উল্লেখ করেন, রিফর্ম ইউকে’র নীতিগুলো নিয়ে আরও বেশি আলোচনা ও পর্যালোচনার প্রয়োজন।
এদিকে, কনজারভেটিভ পার্টির নেতা কেমি বাডেনোচ স্থানীয় নির্বাচনের ফল নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন।
তবে তিনি দলের কাউন্সিলরদের পদত্যাগের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, “রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে আমরা ধীরে ধীরে এগিয়ে যাব এবং আগামী চার বছরের মধ্যে পরিস্থিতি পরিবর্তনের চেষ্টা করব।”
রিফর্ম ইউকে’র চেয়ার জিয়া ইউসুফ জানিয়েছেন, তার দল স্থানীয় সরকারে তাদের সক্ষমতা প্রমাণ করবে এবং অবৈধভাবে দেশে প্রবেশকারীদের বিতাড়িত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করবে।
তিনি আরও জানান, তাদের দল স্থানীয় কাউন্সিলে ‘বৈচিত্র্য, সমতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক’ খাতে অর্থ হ্রাস করার পরিকল্পনা করছে।
যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দেশটির রাজনীতিতে এই মুহূর্তে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে।
লেবার পার্টি ও কনজারভেটিভ পার্টির পাশাপাশি রিফর্ম ইউকে’র মতো নতুন একটি দলের উত্থান রাজনৈতিক সমীকরণে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান