গাজায় ইসরায়েলি অবরোধের কারণে শিশুদের অনাহার-মৃত্যুর ঝুঁকিতে, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগ।
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অবরোধের কারণে সেখানকার শিশুদের মধ্যে দেখা দিয়েছে মারাত্মক অপুষ্টি ও খাদ্য সংকট। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের (জিএমও) সূত্রে জানা গেছে, পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রায় সাড়ে তিন হাজার শিশু অনাহারের কারণে মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে।
এছাড়া, প্রায় দুই লক্ষ নব্বই হাজার শিশু খাদ্য সংকটের চরম সীমায় পৌঁছে গেছে।
জিএমও’র পক্ষ থেকে জানানো হয়, বর্তমানে সেখানকার শিশুরা তাদের জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় ন্যূনতম পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে, ইসরায়েলি অবরোধের কারণে খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রীর তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
বাজারে সামান্য যে খাদ্য পাওয়া যাচ্ছে, তাও সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গাজার ৮০ শতাংশেরও বেশি মানুষ বর্তমানে ত্রাণ সাহায্যের উপর নির্ভরশীল।
সংস্থাটি আরও জানায়, শিশুদের প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাবে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এর মধ্যে, মারাত্মক অপুষ্টির শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া শিশুর সংখ্যা প্রায় ৭০ হাজার।
গাজায় খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রীর অভাবে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে এবং পরিস্থিতি দ্রুত অবনতির দিকে যাচ্ছে।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও ত্রাণ সংস্থাগুলো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ এনেছে। তাদের মতে, গাজায় খাদ্য সরবরাহ বন্ধ করে শিশুদের ওপর চরম নির্যাতন চালানো হচ্ছে।
যদিও ইসরায়েল কর্তৃপক্ষের দাবি, হামাস এখনও জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত অবরোধ অব্যাহত রাখা হবে। গাজায় এখনো ৫৯ জন জিম্মি রয়েছে, যাদের মধ্যে ২৪ জন জীবিত আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ৫২,৪৯৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে ১,১৮,৩৬৬ জন।
জিএমও’র সর্বশেষ তথ্যে মৃতের সংখ্যা ৬১,৭০০ ছাড়িয়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও বহু মানুষ চাপা পরে আছে, যাদের জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা ক্ষীণ।
গাজায় খাদ্য ও চিকিৎসা সংকটের কারণে সেখানকার পরিস্থিতি দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে এবং শিশুদের জীবন চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা