বসন্তের আগমন অনেকের জন্যই আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে, তবে যাদের অ্যালার্জি বা হাঁপানির সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য এই সময়টা বেশ কষ্টের হতে পারে। ফুলের রেণু বা পরাগরেণু, ধুলোবালি, আবহাওয়ার পরিবর্তন – এসব কারণে হাঁচি, শ্বাসকষ্ট, ত্বক চুলকানো, চোখ দিয়ে জল পড়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়।
যারা ভ্রমণের পরিকল্পনা করছেন, তাদের জন্য এই সমস্যাগুলো আরও বেশি উদ্বেগের কারণ হতে পারে। ভ্রমণের সময় অ্যালার্জি ও হাঁপানির সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কিছু প্রস্তুতি ও প্রয়োজনীয় জিনিস সঙ্গে রাখা অপরিহার্য।
বাংলাদেশেও ঋতু পরিবর্তনের সময় অ্যালার্জি ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়ে। বিশেষ করে শহরগুলোতে বায়ুদূষণ একটি বড় সমস্যা, যা শ্বাসকষ্টের রোগীদের জন্য পরিস্থিতি আরও কঠিন করে তোলে।
তাই, ভ্রমণের সময় কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস সাথে রাখা খুবই জরুরি। এখানে এমন কিছু জিনিসের তালিকা দেওয়া হলো, যা ভ্রমণের সময় আপনার অ্যালার্জি ও হাঁপানির সমস্যা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে:
১. **পোর্টেবল নেবুলাইজার (Portable Nebulizer):** ভ্রমণের সময় অ্যাজমা বা হাঁপানির সমস্যা হলে নেবুলাইজার খুবই প্রয়োজনীয়। এটি তরল ঔষধকে ক্ষুদ্র কণিকায় পরিণত করে, যা সহজে ফুসফুসে প্রবেশ করে এবং দ্রুত শ্বাসকষ্ট কমাতে সাহায্য করে।
বাজারে বিভিন্ন ধরনের পোর্টেবল নেবুলাইজার পাওয়া যায়, যা সহজে বহনযোগ্য। দাম: প্রায় ৩,৩০০ টাকা (ডলার প্রতি ১১০ টাকা বিনিময় হার অনুসারে)।
২. **নাক পরিষ্কার করার স্প্রে (Sinus Rinse):** অ্যালার্জির কারণে নাক বন্ধ হয়ে গেলে বা নাকে কফ জমলে এই স্প্রে ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি নাকের ভেতরের ময়লা ও অ্যালার্জেন দূর করে শ্বাসপ্রশ্বাস সহজ করে।
বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের স্যালাইন স্প্রে পাওয়া যায়।
৩. **ত্বকের চুলকানিরোধী লোশন (Itch Relief Cream):** অ্যালার্জির কারণে ত্বক চুলকালে দ্রুত আরাম পাওয়ার জন্য এই ধরনের লোশন খুবই উপকারী। এটি র্যাশ, একজিমা বা পোকামাকড়ের কামড়ের কারণে হওয়া চুলকানি কমাতে সাহায্য করে।
৪. **এপিনেফ্রিন ইনজেকশন বহন করার ব্যাগ (Epinephrine Carrying Case):** যাদের গুরুতর অ্যালার্জির সমস্যা আছে, তাদের জন্য এই ইনজেকশন জরুরি। ভ্রমণের সময় এটি সহজে খুঁজে পাওয়ার জন্য একটি বিশেষ ব্যাগ ব্যবহার করা উচিত।
এতে ইনজেকশনটি সুরক্ষিত থাকে এবং দ্রুত ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত থাকে।
৫. **হাইড্রোকর্টিসন বাম (Hydrocortisone Balm Stick):** এটি ত্বকের চুলকানি ও র্যাশ কমাতে সাহায্য করে। ছোট আকারের হওয়ায় এটি সহজে বহন করা যায়।
৬. **ওষুধ সংরক্ষণের বাক্স (Pill Organizer):** ভ্রমণের সময় নিয়মিত ঔষধ খাওয়ার কথা মনে রাখা কঠিন হতে পারে। এই ধরনের বাক্স আপনার ঔষধগুলো আলাদা করে গুছিয়ে রাখতে সাহায্য করে।
৭. **নাকের নরম টিস্যু (Nose Wipes):** যাদের অ্যালার্জির সমস্যা আছে, তাদের জন্য টিস্যু সবসময় সাথে রাখা দরকার। বাজারে সুগন্ধি ও অ্যালকোহলমুক্ত টিস্যু পাওয়া যায়, যা ত্বককে শুষ্ক করে না।
৮. **এন৯৫ মাস্ক (N95 Masks):** ভ্রমণের সময় বিশেষ করে ফুলের রেণু বা ধুলোবালি থেকে বাঁচতে মাস্ক পরা খুবই জরুরি। এন৯৫ মাস্ক পরা হলে অ্যালার্জেন শরীরে প্রবেশ করতে পারে না।
৯. **পোর্টেবল এয়ার পিউরিফায়ার (Portable Air Purifier):** এটি ভ্রমণের সময় আপনার আশেপাশে বাতাসের গুণগত মান উন্নত করতে পারে। এটি বাতাসে থাকা অ্যালার্জেন ও দূষিত কণা দূর করে।
১০. **শাওয়ার স্টিমার (Shower Steamers):** যাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা আছে, তাদের জন্য গরম পানির ভাপ নেওয়া আরামদায়ক হতে পারে। এই ধরনের স্টিমার ব্যবহার করলে তা আরও কার্যকরী হতে পারে।
এসব জিনিসপত্র ভ্রমণের সময় আপনার অ্যালার্জি ও হাঁপানির সমস্যা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। তবে, যেকোনো নতুন পণ্য ব্যবহারের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
তথ্য সূত্র: ট্রাভেল এন্ড লেজার