ফ্রান্সে ১৯৬৪ সালে সংঘটিত একটি চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা, যা ঘাতকের দীর্ঘ কারাবাস এবং মুক্তি পাওয়ার কয়েক বছর পরেই মৃত্যুর মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয়েছিল। প্যারিসের কাছাকাছি একটি জঙ্গলে ১১ বছর বয়সী বালক লুক তারনের নৃশংস হত্যার ঘটনাটি আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।
ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, ১৯৬৪ সালের ২৬শে মে, লুক তার মায়ের সাথে সামান্য কিছু অর্থ নিয়ে ঝগড়ার পর বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। এরপরদিন সকালে, ভেরিয়ের-লে-বুসোঁ বনের মধ্যে লুকের ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ খুঁজে পাওয়া যায়।
ঘটনার তদন্ত চলাকালীন, হত্যাকারী স্থানীয় পুলিশ, গণমাধ্যম এবং নিহত বালকের পরিবারকে একাধিক চিঠি পাঠিয়ে উপহাস করতে থাকে। এই চিঠিগুলোতে সে নিজেকে ‘গল টিপে হত্যাকারী’ (The Strangler) হিসেবে উল্লেখ করত।
তদন্তকারীরা যখন ঘাতকের খোঁজে ছিলেন, তখন জানা যায় যে, লুসিয়েন লেজার নামে ২৭ বছর বয়সী এক ছাত্র নার্সকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের জেরার মুখে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেন।
এমনকি, আদালত কক্ষে চিৎকার করে তিনি বলেছিলেন, “আমি একজন দানব!” পরে অবশ্য তিনি তার স্বীকারোক্তি প্রত্যাহার করে নেন।
মামলার শুনানিতে, লেজার দাবি করেন যে, ঘটনার রাতে তার স্মৃতি ছিল না। যদিও, ১৯৬৬ সালে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
দীর্ঘ ৪০ বছর কারাবাসের পর, ২০০৫ সালের অক্টোবরে লেজারকে মুক্তি দেওয়া হয়। মুক্তির তিন বছর পরেই, ২০০৮ সালে তিনি নিজ বাসভবনে মারা যান।
লুসিয়েন লেজারের বিচার এবং তার কারাজীবনের এই কাহিনি, প্যারিসের সমাজে গভীর প্রভাব ফেলেছিল। জানা যায়, লেজার কেন লুককে হত্যা করেছিলেন? এর উত্তরে তিনি বলেছিলেন, “ছেলেটিকে দেখে আমার নিজের বয়সের কথা মনে হয়েছিল, যখন আমিও তার মতোই অসুখী ছিলাম।”
তথ্য সূত্র: পিপল