সঙ্গীত শিল্পী ক্যাসি, তাঁর প্রাক্তন প্রেমিক শন ‘ডিডি’ কম্বসের বিরুদ্ধে আনা যৌন পাচার মামলার শুনানিতে দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্য দিতে গিয়ে নির্যাতনের ভয়াবহ বর্ণনা দিয়েছেন।
মঙ্গলবার আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে তিনি জানান, কম্বসের সঙ্গে সম্পর্কের দশ বছরে তিনি শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে ক্যাসি জানান, কম্বস তাঁকে পুরুষ যৌনকর্মীদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে বাধ্য করতেন। এমনকি তাঁর সামান্য কোনো আচরণে অপছন্দ হলে, মারধর করতেন কম্বস।
“মুখের অভিব্যক্তি সামান্য এদিক-ওদিক হলেই, তিনি মারধর শুরু করতেন,” – আদালতকে জানান ক্যাসি।
ক্যাসির আসল নাম ক্যাসান্ড্রা ভেন্টুরা। তিনি আদালতে বলেছেন, কম্বস তাঁর কিছু ভিডিও প্রকাশ করার ভয় দেখাতেন, যেগুলোতে তাঁকে পুরুষ যৌনকর্মীদের সঙ্গে দেখা যায়।
যদিও কম্বসের আইনজীবীরা তাঁর মক্কেলের সহিংস আচরণের কথা স্বীকার করেছেন, তবে তাঁদের দাবি, যৌন সম্পর্কগুলো ছিল পারস্পরিক সম্মতিতে। তাঁরা বলছেন, ডিডির বিরুদ্ধে আনা যৌন পাচার ও চাঁদাবাজির অভিযোগ ভিত্তিহীন।
কম্বসের আইনজীবীরা এখনো পর্যন্ত ক্যাসিকে জেরা করেননি। সাধারণত, এই ধরনের জেরা সাক্ষীর বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই করতে বা তাঁর দেওয়া তথ্যের ফাঁক-ফোকর খুঁজে বের করতে সহায়তা করে।
জানা গেছে, এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া প্রায় দুই মাস ধরে চলতে পারে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, প্রভাবশালী সঙ্গীত প্রযোজক হিসেবে নিজের ক্ষমতার ব্যবহার করে কম্বস নারীদের মাদক খাইয়ে ‘ফ্র্যাক অফস’ নামের যৌন পার্টিতে অংশ নিতে বাধ্য করতেন।
২০০৫ সালে, যখন ক্যাসির বয়স ছিল ১৯ বছর, তখন তাঁর সঙ্গে কম্বসের পরিচয় হয়। সেই সময় ক্যাসি ছিলেন একজন উঠতি মডেল ও অভিনেত্রী।
২০০৬ সালে কম্বসের ‘ব্যাড বয় রেকর্ডস’ থেকে প্রকাশিত তাঁর ‘মি অ্যান্ড ইউ’ গানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।
তখন কম্বসের বয়স ছিল ৩৭ বছর। শুরুতে তিনি ক্যাসির ক্যারিয়ার গড়তে সাহায্য করেন এবং এক দশক ধরে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল।
২০১৯ সালে ক্যাসি কম্বসের রেকর্ড লেবেল ত্যাগ করেন। এর চার বছর পর, ২০২৩ সালে তিনি কম্বসের বিরুদ্ধে শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের অভিযোগ এনে মামলা করেন।
আদালতে তিনি জানান, তাঁদের সম্পর্কের কিছু সুন্দর মুহূর্ত ছিল, তবে কম্বস সবসময়ই ছিলেন নিয়ন্ত্রণকামী এবং প্রায়ই সহিংস হতেন।
ক্যাসি আরও জানান, তাঁর বয়স যখন ২২ বছর, তখন কম্বস প্রথম তাঁকে ‘ফ্র্যাক অফ’-এ অংশ নিতে বলেন।
এই ঘটনার পরে তিনি নিজেকে খুবই অসহায় ও দূষিত মনে করেছিলেন, তবে কম্বস খুশি হয়েছিলেন, তাই তিনি যেন কিছুটা স্বস্তিও পেয়েছিলেন।
“এটা ছিল তাঁর (কম্বসের) এক ধরনের ফ্যান্টাসি। তিনি পুরো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং সেভাবেই সবকিছু পরিচালনা করতেন,” – আদালতকে জানান ক্যাসি।
বর্তমানে ৫৫ বছর বয়সী শন ‘ডিডি’ কম্বস সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে কারাগারে বন্দী আছেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁর ১৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস