ইংল্যান্ডের উপকূলবর্তী শহর হেস্টিংস-এর এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন হয়েছে একুশ শতকে। একসময় ১০৬৬ সালের হেস্টিংসের যুদ্ধের জন্য পরিচিত এই শহরটি, এখন যেন নতুন করে জেগে উঠেছে।

এক দশকেরও বেশি সময় ধরে শহরটি এবং এর প্রতিবেশী সেন্ট লিওনার্ডস-অন-সি-এর পুরনো জৌলুস ফিরে এসেছে, যা পর্যটকদের কাছে এক আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে।

ভিক্টোরিয়ান যুগে হেস্টিংস-এর খ্যাতি ছিল তুঙ্গে, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এর আকর্ষণ কমে গিয়েছিল।

বর্তমানে এখানে অসংখ্য স্বাধীন দোকান, রেস্টুরেন্ট, পাব এবং বুটিক হোটেল তৈরি হয়েছে। এখানকার পুরনো শহরটিতে (Old Town) রয়েছে কাঠের তৈরি পাব এবং প্রাচীন জিনিসপত্রের দোকান।

রবার্টস রামাজ-এর মতো দোকানে সিরামিক এবং অন্যান্য আকর্ষণীয় জিনিস পাওয়া যায়। এছাড়াও, এখানে রয়েছে ব্রিটেনের প্রাচীনতম একটি ফিশিং ফ্লিট, যেখানে এখনো জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য দেখা যায়।

পুরনো দিনের স্মৃতি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা কাঠের তৈরি নেট শপগুলো (Net Shops) যেন ইতিহাসের সাক্ষী। এই স্থানগুলি পর্যটকদের কাছে খুবই প্রিয়।

হেস্টিংস-এর আকর্ষণীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম হল হেস্টিংস কনটেম্পোরারি গ্যালারি, যেখানে বিভিন্ন ধরনের শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হয়।

যারা সমুদ্র ভালোবাসেন, তাদের জন্য স্যামফায়ার সোনা-র ব্যবস্থা রয়েছে, যেখানে বসে সূর্যাস্তের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করা যায়। এছাড়াও, পেট লেভেল বিচ-এ হেঁটে বেড়ানো বা পাথরের মধ্যে খেলা করার সুযোগ রয়েছে।

শহরের আশেপাশে টিলিংহাম-এর মতো সুন্দর виноградক্ষেত রয়েছে, যেখানে ওয়াইনের স্বাদ নেওয়া যেতে পারে।

হেস্টিংস-এর খাদ্যরসিকদের জন্যেও রয়েছে দারুণ কিছু সুযোগ। এখানকার “দ্য স্টাড”-এ তাজা সামুদ্রিক খাবার পাওয়া যায়।

ম্যাগি’স-এর মত পুরনো ক্যাফেতে বসে ফিশ অ্যান্ড চিপস-এর স্বাদ নিতে পারেন। লোকাল বিয়ারের জন্য “দ্য ক্রাউন” পাব-এর জুড়ি নেই।

সেন্ট লিওনার্ডস-এ “হাফ ম্যান হাফ বার্গার” একটি জনপ্রিয় জায়গা। যারা সকালের নাস্তার জন্য ভালো জায়গা খুঁজছেন, তাদের জন্য “স্লিপার বেগল” একটি আদর্শ স্থান হতে পারে।

হেস্টিংস-এ থাকার জন্য কয়েকটি ভালো জায়গা হল – “দ্য ওল্ড রেকটরি”, যেখানে ফরাসি-আর্টের ছোঁয়া পাওয়া যায়। এছাড়া, “ডগহাউস ইন”-এর মত নতুন হোটেলে থাকতে পারেন, যা সমুদ্রের কাছাকাছি অবস্থিত।

যারা একটু আলাদা পরিবেশে থাকতে চান, তারা ফেয়ারলাইটে অবস্থিত “লুকিং গ্লাস লজ”-এর মত জায়গায় যেতে পারেন।

বসন্ত এবং গ্রীষ্মকালে হেস্টিংস-এর সমুদ্রের নীল জলরাশি এবং বিভিন্ন রাইড-এর আকর্ষণ পর্যটকদের মন জয় করে। এখানকার “জ্যাক ইন দ্য গ্রিন”-এর মত লোকনৃত্য ও প্যারেড-এর আয়োজন করা হয়।

শীতকালেও পাবগুলি আরও উষ্ণ হয়ে ওঠে এবং সূর্যাস্তের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখা যায়। সব মিলিয়ে, হেস্টিংস-এর এই নতুন রূপ পর্যটকদের জন্য এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা নিয়ে আসে।

তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক।