মহাকাশ গবেষণায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে, নাসার পারসিভারেন্স রোভার প্রথমবারের মতো মঙ্গলের বুকে এমন এক “আলোর ঝলকানি” (aurora) আবিষ্কার করেছে যা খালি চোখে দেখা সম্ভব। এতদিন পর্যন্ত, মঙ্গল গ্রহে দেখা যাওয়া এই ধরনের আলোকরশ্মি কেবল অতিবেগুনি আলোতেই ধরা পড়ত।
কিন্তু এবার, বিজ্ঞানীরা এমন এক ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন যা ভবিষ্যতে লাল গ্রহে অভিযান চালানো নভোচারীদের জন্য এক দারুণ অভিজ্ঞতার সূচনা করবে।
২০২৪ সালের মার্চ মাসে ঘটে যাওয়া এক শক্তিশালী সৌর ঝড়ের ফলস্বরূপ এই দৃশ্য সৃষ্টি হয়েছিল। নাসা জানিয়েছে, এই সৌর ঝড়ের ফলে সূর্যের করোনা থেকে নির্গত হওয়া বিশাল আকারের কণা, যা ‘করোনাল মাস ইজেকশন’ নামে পরিচিত, তা সরাসরি আঘাত হানে মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলে।
এর ফলেই সৃষ্টি হয় সবুজ আভাযুক্ত এই আলোচ্ছটা। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই আবিষ্কারের ফলে এখন মঙ্গলের আকাশে আলোকরশ্মি দেখা যাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব হবে।
এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত, অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী এলিস রাইট নাটসেন জানান, “এই ঘটনার উজ্জ্বলতা হয়তো ধূলিকণার কারণে কিছুটা ম্লান ছিল, তবে উন্নত পরিবেশে বা আরও শক্তিশালী কণা নিঃসরণের ক্ষেত্রে এটি মানুষের চোখে দৃশ্যমান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”
এই আবিষ্কারের গুরুত্ব শুধু দৃশ্যমানতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এর মাধ্যমে তারা মঙ্গলের আবহাওয়া সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে পারবেন এবং ভবিষ্যতে মহাকাশ অভিযানের পরিকল্পনা আরও ভালোভাবে করতে পারবেন।
এই প্রথম, কোনো গ্রহের পৃষ্ঠ থেকে এমন আলোকরশ্মির ছবি তোলার ঘটনা ঘটল। এর আগে, মহাকাশযান থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই এমনটা জানা গিয়েছিল।
পারসিভারেন্স রোভার, যা ২০২০ সালে যাত্রা শুরু করে ২০২১ সাল থেকে মঙ্গলের জেzero ক্রেটারে (Jezero Crater) অনুসন্ধান চালাচ্ছে, সেখানকার মাটি ও পাথরের নমুনা সংগ্রহ করছে। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, এই অঞ্চলের শুকনো মাটিতে একসময় হ্রদ ছিল এবং এখানে প্রাণের অস্তিত্বের সম্ভবনাও রয়েছে।
এই আবিষ্কার, মহাকাশ গবেষণায় বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে, যা ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণা প্রকল্পে অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করবে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস