মাদারীপুর মসজিদে নূর (বড় মসজিদের) খতিব, আলহাজ্ব হযরত মাওলানা হাফেজ মুফতি জোবায়ের হাসান কাসেমী ৩ জানুয়ারি জুমার নামাজের পূর্বে খুতবার আলোচনায় ইসলামিক শরিয়াহ অনুযায়ী বিবাহ ও তালাক সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন।
কাসেমী বলেন, বিবাহ ও তালাক সহজ ও কার্যকর পন্থা প্রসঙ্গ উল্লেখ করে কোরআন হাদিসের আলোকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, ইসলাম বিবাহ বন্ধনকে সহজ করেছে এবং তালাককেও নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে অনুমোদন দিয়েছে।
তবে বিবাহ ও তালাক উভয় ক্ষেত্রেই ইসলামিক শরিয়াহর মূলনীতি মেনে চলা জরুরি। তিনি উল্লেখ করেন, যদি কোনো পরিবার উভয় পক্ষের সম্মতিতে তাদের সন্তানদের জন্য বিবাহ বন্ধন গড়ে তোলে এবং অভিভাবকদের সম্মতি থাকে, তবে সেটি ইসলামে বৈধ বিবাহ হিসেবে গণ্য হবে। এটি ইসলামের সরল ও সহজ পদ্ধতির একটি উদাহরণ।
মাসআলা না বোঝার কারণে ভুলের বসত হয়ে আমরা আপন সংসার জীবনকে অবৈধ সম্পর্কের নেয় সংসার পরিচালনা করে থাকি । অবৈধ কার্যকলাপের নিন্দা করতে গিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে তিনি বলেন ,বর্তমানে অনেকেই ইসলামের বিধান অমান্য করে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করছে, যা সমাজের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এই ধরনের অবৈধ সম্পর্ককে কখনোই বিবাহ বলে অভিহিত করা যায় না। ইসলাম বিবাহকে পবিত্র এবং মহান মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
মদ ও হারামের প্রতি কঠোর নিন্দা করেছেন। তিনি বিভিন্ন প্রসঙ্গ টেনে মুফতি সাহেব বলেন, মদ পান করা সম্পূর্ণরূপে হারাম এবং এটি শয়তানের কাজ। মদ্যপানের মধ্যে কোনো শান্তি নেই; বরং এটি মানুষের জীবন ও ঈমানকে ধ্বংস করে।
তিনি উল্লেখ করেন, যখন ইসলামে মদ হারাম ঘোষণা করা হয়, তখন সাহাবারা তৎক্ষণাৎ তাদের ঘর থেকে মদের ভাণ্ডার বাইরে ফেলে দিয়েছিলেন। মদ ত্যাগের মাধ্যমেই সাহাবারা দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ মানুষে পরিণত হতে পেরেছিলেন।
ঈমান ও ইসলামের ভিত্তি সম্পর্কে আলোচনা রাখতে গিয়ে
তিনি বলেন, ইসলামের মূল ভিত্তি হচ্ছে ঈমান। বিশ্বাস ছাড়া কোনো কাজের মূল্য নেই। যারা কোরআনের বিরোধিতা করে, তাদের সবকিছু ধ্বংস হয়ে যায়। কোরআন আল্লাহর একমাত্র নির্দেশিত পথ এবং ইসলামী জীবন ব্যবস্থার একমাত্র মানদণ্ড।
বর্তমান পরিস্থিতি ও আলেমদের ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বিভিন্ন দিক উল্লেখ করে আলোচনা রাখেন।
মুফতি সাহেব দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, পূর্ববর্তী সরকার অহংকারের বশে আলেমদের হক কথা বলতে দেয়নি। যারা আলেম-ওলামাদের সম্মান করে না, তারা কখনো সফল হতে পারে না। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবার অন্তরে ইসলামের প্রতি বিশ্বাস এবং ঈমান জাগ্রত করার তৌফিক দান করুন।
তিনি দেশ ও জাতির কল্যাণে ইসলামী জীবন ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করেন, যেন আমরা সবাই ঈমান ও ইসলামের পথে অটল থাকতে পারি।
তিনি খুতবার শেষ অংশে আল্লাহর কাছে আমাদের জন্য ক্ষমা, দয়া এবং কল্যাণ প্রার্থনা করেন।