মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের জন্য ‘অস্থায়ী সুরক্ষা মর্যাদা’ (টিপিএস) বাতিলের পথ সুগম করেছে, যা কয়েক লক্ষ মানুষের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত করে তুলেছে। সম্প্রতি আদালতের এই সিদ্ধান্তের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী বহু ভেনেজুয়েলীয় নাগরিককে হয়তো তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে।
এই ঘটনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অভিবাসন নীতি এবং মানবাধিকারের প্রশ্ন নতুন করে সামনে এনেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই শীর্ষ আদালত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে নেওয়া একটি সিদ্ধান্তের পক্ষে রায় দিয়েছে, যেখানে ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের টিপিএস বাতিল করার কথা বলা হয়েছিল।
টিপিএস হলো এমন একটি ব্যবস্থা, যা কোনো দেশের নাগরিককে বিশেষ পরিস্থিতিতে, যেমন—যুদ্ধ বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে নিজ দেশে ফিরতে অক্ষম হলে, যুক্তরাষ্ট্রে সাময়িকভাবে বসবাসের অনুমতি দেয়। এই সুরক্ষার ফলে ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের দেশে ফেরত পাঠানোর ঝুঁকি আপাতত তৈরি হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন সেই সব ভেনেজুয়েলীয় নাগরিক, যারা মূলত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতার কারণে দেশ ছেড়েছেন।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৪ সাল থেকে প্রায় ৮০ লক্ষ ভেনেজুয়েলীয় তাদের দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। এদের মধ্যে অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগ ছিল, টিপিএস-এর সুবিধা গ্রহণকারী কিছু ভেনেজুয়েলীয় নাগরিক বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। যদিও এর স্বপক্ষে তারা কোনো প্রমাণ পেশ করতে পারেনি।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতি নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠন এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে।
তাদের মতে, ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের টিপিএস বাতিল করা হলে মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হতে পারে। কারণ, বর্তমানে ভেনেজুয়েলার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি খুবই নাজুক অবস্থায় রয়েছে।
সেখানে জীবনযাত্রার মান নিম্নগামী এবং মৌলিক চাহিদাগুলোও পূরণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন টিপিএস প্রোগ্রামটি আরও কিছু দেশের নাগরিকদের জন্য প্রসারিত করেছিলেন, যার মধ্যে ভেনেজুয়েলাও ছিল।
তবে ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের ফলে বাইডেনের নেওয়া পদক্ষেপগুলোও এখন প্রশ্নের মুখে পড়েছে। বর্তমানে প্রায় ৬ লক্ষ ভেনেজুয়েলীয় নাগরিক টিপিএস-এর সুবিধা ভোগ করছেন।
তাদের ভবিষ্যৎ কী হবে, এখন সেটাই দেখার বিষয়। এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার কী পদক্ষেপ নেয়, সেদিকেই সবার নজর।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা