যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে পাঠানো পশ্চিমা সাহায্য সরঞ্জামের উপর নজর রাখছে রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা।
সম্প্রতি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা সংস্থা জানিয়েছে যে রুশ সামরিক গোয়েন্দারা ইউক্রেনে সহায়তা সরবরাহকারী পশ্চিমা প্রযুক্তি ও সরবরাহ কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে সাইবার হামলা চালিয়েছে।
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (National Security Agency – NSA) জানিয়েছে, হ্যাকাররা মূলত জানতে চেয়েছিল ইউক্রেনে কী ধরনের সাহায্য আসছে এবং কত পরিমাণে আসছে।
তাদের এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে, ইউক্রেন সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় ইন্টারনেট-সংযুক্ত ক্যামেরাগুলোর অ্যাক্সেস নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এছাড়াও, রাশিয়া সামরিক সহায়তা এবং মানবিক সাহায্য সহ বিভিন্ন ধরণের সরঞ্জামের উপর নজর রাখছিল।
যুক্তরাষ্ট্র, এবং অন্যান্য পশ্চিমা দেশসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিরক্ষা, পরিবহন ও সরবরাহ সংস্থাগুলোকে এই সাইবার হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। বিমানবন্দরের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোও তাদের নজরদারির আওতায় ছিল।
এনএসএ’র রিপোর্ট অনুযায়ী, এই হ্যাকিং কার্যক্রম ২০২২ সাল থেকে শুরু হয়েছে, যে বছর রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ করে।
এই হামলায় জড়িত সন্দেহে ‘ফ্যান্সি বিয়ার’ নামে পরিচিত একটি রুশ সামরিক গোয়েন্দা ইউনিটের নাম উঠে এসেছে। এই ইউনিটটি অতীতে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের বিরুদ্ধেও সাইবার হামলা চালিয়েছিল।
হ্যাকাররা সাধারণত তথ্যের জন্য ফিশিংয়ের মতো কৌশল ব্যবহার করে থাকে, যেখানে তারা ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে সংবেদনশীল তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।
এছাড়াও ছোট অফিস ও বাড়ির কম্পিউটার নেটওয়ার্কের দুর্বলতাগুলোও তারা কাজে লাগায়।
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ গ্রান্ট গেইয়ারের মতে, হ্যাকাররা সরবরাহ চেইন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পেতে সক্ষম হয়েছে।
এর মাধ্যমে তারা বুঝতে পারছিল কখন, কিভাবে এবং কোন পথে সরঞ্জামগুলো ইউক্রেনে পাঠানো হচ্ছে। এই তথ্য ব্যবহার করে রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে তাদের সামরিক পরিকল্পনা আরও সুসংহত করতে পারে অথবা সরবরাহ ব্যবস্থায় সরাসরি সাইবার অথবা ভৌত আক্রমণ চালাতে পারে।
মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে তাদের প্রতিরক্ষা কোম্পানিগুলোকে নিরাপত্তা সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়াও, ইউরোপে রাশিয়ার মদতে হওয়া কিছু নাশকতামূলক ঘটনার জন্য সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
মার্কিন নিরাপত্তা সংস্থা, ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (FBI) এবং মিত্র দেশগুলোর নিরাপত্তা সংস্থাগুলো যৌথভাবে এই সাইবার হামলার বিষয়ে সতর্কবার্তা জারি করেছে।
সংস্থাগুলো মনে করে, সাহায্য সরঞ্জামের উপর নজরদারি চালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে রাশিয়ার। তাই সাহায্য সরবরাহকারী সংস্থাগুলোকে সতর্ক থাকতে হবে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস