**ফ্রেঞ্চ ওপেন ২০২৫: মাঠের বাইরের বিতর্ক, শীর্ষ খেলোয়াড় এবং আরও কিছু**
আসন্ন ফ্রেঞ্চ ওপেন ২০২৫ শুরু হতে আর কয়েক দিন বাকি। বিশ্বের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ এই টেনিস টুর্নামেন্ট নিয়ে ক্রীড়া প্রেমীদের আগ্রহ তুঙ্গে। তবে খেলার মাঠের উত্তেজনার পাশাপাশি এবার আলোচনা হচ্ছে মাঠের বাইরের কিছু বিষয় নিয়েও।
খেলোয়াড়দের অর্থ উপার্জনের দাবি, ডোপিং বিতর্ক এবং আইনি জটিলতা—সবকিছু মিলিয়ে এবারের ফ্রেঞ্চ ওপেন অন্যরকম এক প্রেক্ষাপট তৈরি করেছে।
টেনিসের শীর্ষস্থানীয় খেলোয়াড়রা গ্র্যান্ড স্ল্যাম টুর্নামেন্টগুলো থেকে প্রাপ্ত অর্থের একটা বড় অংশ নিজেদের জন্য চাইছেন। তাঁদের মূল অভিযোগ, টুর্নামেন্টগুলো যে পরিমাণ আয় করে, খেলোয়াড়দের সেই তুলনায় অনেক কম অর্থ দেওয়া হয়।
জানা গেছে, শীর্ষ ২০ জন খেলোয়াড়ের মধ্যে নোভাক জোকোভিচ, কোকো গফ, ইয়ানিক সিনার এবং আরিনা সাবালেঙ্কা-র মতো তারকারা একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন, যেখানে তাঁরা অতিরিক্ত অর্থ, খেলোয়াড়দের কল্যাণে অর্থ বিনিয়োগ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে আরও বেশি অংশগ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, এই টুর্নামেন্টগুলো প্রায় ১.৫ বিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় বিশাল পরিমাণ) আয় করে, যার ১০ থেকে ২০ শতাংশ খেলোয়াড়দের মধ্যে বিতরণ করা হয়। খেলোয়াড়রা চান, এই হিস্যাটা আরও বাড়ানো হোক।
এই বিষয়ে ফ্রেঞ্চ ওপেন, উইম্বলডন, ইউএস ওপেন এবং অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে শীর্ষস্থানীয় খেলোয়াড়দের আলোচনা হয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসা যায়নি।
খেলোয়াড়দের পক্ষ থেকে জেসিকা পেগুলা জানিয়েছেন, তাঁরা চান টুর্নামেন্ট থেকে প্রাপ্ত আয়ের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ যেন খেলোয়াড়দের দেওয়া হয় এবং খেলোয়াড়দের কল্যাণে অর্থ ব্যয় করা হয়।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আইনি লড়াই। নোভাক জোকোভিচের প্রতিষ্ঠিত ‘প্রফেশনাল টেনিস প্লেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন’ (PTPA) সম্প্রতি মহিলা টেনিস সংস্থা (WTA), পুরুষ টেনিস সংস্থা (ATP), আন্তর্জাতিক টেনিস ফেডারেশন (ITF) এবং আন্তর্জাতিক টেনিস ইন্টিগ্রিটি এজেন্সির (ITIA) বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে।
PTPA-এর অভিযোগ, টেনিসের এই সংস্থাগুলো একটি ‘কার্টেল’-এর মতো কাজ করে, যা খেলোয়াড়দের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে।
অন্যদিকে, WTA এই মামলার বিরোধিতা করে বলেছে, পুরুষ খেলোয়াড়দের এই মামলা করার কোনো অধিকার নেই।
এবারের ফ্রেঞ্চ ওপেনে কিছু শীর্ষ খেলোয়াড়ের ওপর ডোপিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। ইগা শিয়াওটেক গত বছর এক মাসের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন।
নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরার পর ইয়ানিক সিনার ইতালিয়ান ওপেনের ফাইনালে উঠলেও, কার্লোস আলকারাজের কাছে হেরে যান। তবে নিষেধাজ্ঞার কারণে সিনারের র্যাঙ্কিংয়ে কোনো পরিবর্তন হয়নি।
পুরুষদের বিভাগে কার্লোস আলকারাজকে এবার অন্যতম ফেভারিট হিসেবে ধরা হচ্ছে। ক্লে-কোর্টে খেলার অভিজ্ঞতার কারণে তাঁর ভালো করার সম্ভাবনা রয়েছে।
মহিলাদের বিভাগে শিরোপা জয়ের দৌড়ে রয়েছেন ইগা শিয়াওটেক, কোকো গফ, জ্যাসমিন পাওলিনি এবং আরিনা সাবালেঙ্কা। এই খেলোয়াড়দের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
ফ্রেঞ্চ ওপেন ২০২৫-এর দিকে এখন সবার নজর। মাঠের বাইরের বিতর্ক ছাপিয়ে খেলোয়াড়রা তাঁদের সেরাটা দিতে প্রস্তুত। খেলাপ্রেমীরাও তাকিয়ে আছেন, কে হাসবেন সাফল্যের হাসি, সেই অপেক্ষায়।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস