শিরোনাম: মায়ের আবদার: নতুন গ্র্যাজুয়েটের কাছে প্রতি মাসে ১০০০ ডলার, দ্বিধায় তরুণী।
একটি নতুন চাকরির শুরুতেই এক তরুণী, যিনি সম্প্রতি কলেজ শেষ করেছেন, তাঁর মায়ের কাছ থেকে মাসিক ভাতার দাবিতে পড়েছেন। এই ঘটনাটি বর্তমান সমাজের পারিবারিক সম্পর্কের এক নতুন দিক উন্মোচন করে, যেখানে একদিকে সন্তানের ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্ন, অন্যদিকে পরিবারের প্রতি দায়িত্ববোধের টানাপোড়েন।
ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন ওই তরুণী, যিনি এখন ২৩ বছর বয়সী, তাঁর মায়ের সঙ্গে একটি জটিল সম্পর্ক থেকে মুক্তি পাওয়ার সময়ে সাহায্য করেছিলেন। মা একটি ‘বিষাক্ত সম্পর্ক’ থেকে বেরিয়ে আসার পর মেয়ের কাছে আর্থিক সাহায্য চেয়েছিলেন। সেই সময়ে মেয়েটি পড়াশোনা করা সত্ত্বেও মাকে নিয়মিত অর্থ দিতেন।
কিন্তু মেয়ের পড়াশোনা শেষ হওয়ার পর যখন তিনি একটি ভালো চাকরি খুঁজে পান, তখন পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে মোড় নেয়। তিনি নিজের জীবন ও আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাচ্ছিলেন, কিন্তু মায়ের ১০০০ ডলার (যা বাংলাদেশি টাকায় একটি বড় অঙ্ক) মাসিক ভাতার দাবি তাঁর মনে নতুন করে উদ্বেগের সৃষ্টি করে। একদিকে নিজের স্বাধীনতা, অন্যদিকে মায়ের প্রতি কর্তব্য—এই দুইয়ের মাঝে তিনি যেন দিশেহারা হয়ে পড়েন।
মেয়েটি জানান, তিনি এখন অন্য শহরে বসবাস করেন, নিজের ফ্ল্যাটের ভাড়া পরিশোধ করেন, গাড়ির কিস্তি এবং ছাত্র ঋণের বোঝা তো আছেই, এছাড়াও নিজের পেশাগত উন্নয়নের জন্য প্রশিক্ষণ নিতেও প্রচুর অর্থ খরচ করতে হয়। এই অবস্থায় মায়ের এমন আবদার তাঁকে হতাশ করে তোলে।
আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, মা নাকি আগের পাঠানো টাকা প্রয়োজনীয় জিনিসের পরিবর্তে ফ্যাশনেবল পোশাক ও অন্যান্য বিলাসিতার পেছনে খরচ করতেন। মেয়েটি আরও জানান, তাঁর মা আগে স্বামীর জন্য কাজ করতে পারেননি, তবে সংসার জীবনে তিনি খুশিই ছিলেন। এখন, সম্পর্ক থেকে মুক্তি পাওয়ার পরও তিনি কাজ করতে রাজি নন, বরং বিভিন্ন অজুহাত দেখাচ্ছেন। তাঁর মতে, সমাজে কাজ করলে তাঁকে ‘নির্লজ্জ’ ভাবা হবে।
মেয়ের পক্ষ থেকে বিষয়টি বুঝিয়ে বলার পরেও মা তাঁর সিদ্ধান্তে অনড়। এই পরিস্থিতিতে, তরুণী তাঁর দ্বিধা দূর করতে এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, যা ‘রেডিট’ নামে পরিচিত, সেখানে তাঁর অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন এবং অন্যদের পরামর্শ চান।
মেয়েটির মা, যিনি কাজ করতে চান না, মেয়ের কাছে প্রতিদিনের হিসেবে প্রায় ৩,০০০ টাকার বেশি দাবি করছেন। মেয়েটি তাঁর এই আবদারের বিরোধিতা করে বলেছেন, তাঁর আরও পাঁচ ভাইবোন আছে, যাদের প্রত্যেকেই প্রতিদিন এই পরিমাণ টাকার চেয়ে বেশি রোজগার করতে পারে।
এই ঘটনার পর মা মেয়ের উপর অসন্তুষ্ট হয়েছেন, যেখানে সদ্য স্নাতক হওয়া মেয়েটি একদিকে পরিবারের প্রতি সাহায্য করার আকাঙ্ক্ষা এবং অন্যদিকে নিজের আর্থিক স্বাধীনতা রক্ষার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা করছেন।
এই ঘটনা আমাদের সমাজে মা ও মেয়ের সম্পর্কের গভীরতা এবং আর্থিক দায়িত্ববোধ নিয়ে নতুন করে ভাবতে শেখায়। আপনার কী মনে হয়, এই পরিস্থিতিতে মেয়েটির কী করা উচিত?
তথ্যসূত্র: পিপলস