যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক ঘাঁটিতে আটক অভিবাসীদের অধিকার খর্ব করার অভিযোগে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন দেশটির একজন ফেডারেল বিচারক। বিচারক ব্রায়ান মারফি, যিনি অভিবাসন সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে এই মন্তব্য করেন, ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে আদালতের নির্দেশ অমান্য করারও অভিযোগ তুলেছেন।
আদালতের নথি অনুযায়ী, সম্প্রতি ডজিবুতির একটি সামরিক ঘাঁটিতে আটক কয়েকজন অভিবাসীকে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা ছিল ট্রাম্প প্রশাসনের। বিচারক মারফির মতে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে অভিবাসীদের আইনি অধিকার, বিশেষ করে তাদের বক্তব্য পেশ করার সুযোগকে খর্ব করা হয়েছে। এমনকি, যাদের বিরুদ্ধে সামান্য অপরাধের অভিযোগ রয়েছে, তাদেরও ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, অভিবাসীদের আইনজীবীরা অভিযোগ করেন যে, তাদের মক্কেলদের, বিশেষ করে যারা নির্যাতনের শিকার হতে পারেন, এমন সম্ভবনা রয়েছে, তাদের কোনো প্রকার শুনানির সুযোগ না দিয়েই তৃতীয় কোনো দেশে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আইনজীবীরা জাতিসংঘের নির্যাতন বিরোধী কনভেনশনের কথা উল্লেখ করে বলেন, কোনো ব্যক্তিকে এমন কোনো দেশে ফেরত পাঠানো যায় না, যেখানে নির্যাতনের সম্ভবনা রয়েছে।
বিচারক মারফি তার আদেশে উল্লেখ করেছেন, প্রশাসনের এই ধরনের পদক্ষেপ ‘স্পষ্টতার অভাব’ তৈরি করে এবং আদালতের আদেশ এড়ানোর চেষ্টা করে। তিনি বলেন, “অন্য একটি মহাদেশে অভিবাসন সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা কঠিন হতে পারে, তবে আদালত কখনোই বলেনি যে, সামরিক ঘাঁটিকে অভিবাসন কেন্দ্রে পরিণত করতে হবে। বরং, এটি ছিল একটি বিকল্প, যা প্রশাসনের অনুরোধেই বিবেচনা করা হয়েছিল।”
আদালতে শুনানিতে, বিচারক মারফি আরও উল্লেখ করেন যে, আটককৃতদের মধ্যে কয়েকজনের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ থাকলেও, তাদের আইনি অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান।
আদালত সূত্রে জানা যায়, এই মামলার জের ধরে বিচারক মারফি প্রশাসন কর্মকর্তাদের আদালত অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত করার কথা বিবেচনা করছেন। মার্কিন বিচার বিভাগের এই পদক্ষেপ অভিবাসন এবং আইনি প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে বিচার বিভাগের একটি বড় ধরনের বিরোধের সৃষ্টি করেছে।
এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে সিএনএন-এর পক্ষ থেকে মার্কিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও, তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
তথ্যসূত্র: CNN