চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের জোট: বাণিজ্য ও নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা।
চীনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর জিয়ামেনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন। এতে যোগ দিয়েছেন ১১টি প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা। বেইজিংয়ের লক্ষ্য, এই অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও গভীর করা। সম্মেলনে বাণিজ্য, অবকাঠামো উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং নিরাপত্তা বিষয়ক বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ওয়াং ই-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে কিরিবাতি, নিউ, টোঙ্গা, নাউরু, মাইক্রোনেশিয়া, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, ভানুয়াতু, পাপুয়া নিউ গিনি, কুক আইল্যান্ডস, ফিজি এবং সামোয়ার শীর্ষ কূটনীতিকরা অংশ নিচ্ছেন। এটি চীন ও দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর মধ্যে অনুষ্ঠিত তৃতীয় শীর্ষ বৈঠক, তবে চীনে সরাসরি এই ধরনের বৈঠক এই প্রথম।
বৈঠকে চীনের পক্ষ থেকে মূলত এই অঞ্চলের দেশগুলোতে অর্থনৈতিক সহায়তা বাড়ানো, অবকাঠামো নির্মাণে সহযোগিতা এবং নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষরের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলে আগের মতো আগ্রহ দেখাচ্ছে না বলেই চীন সেখানে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। এরই মধ্যে চীন সরকার সলোমন দ্বীপপুঞ্জের সঙ্গে একটি নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এছাড়াও, তারা ভানুয়াতু ও কিরিবাতির সঙ্গেও অনুরূপ চুক্তি করতে আগ্রহী।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ একটি কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। এই অঞ্চলে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রপথ রয়েছে। এছাড়া, গভীর সমুদ্র বন্দর এবং খনিজ পদার্থের সম্ভাব্য ভাণ্ডারও রয়েছে। তাই সামরিক দিক থেকেও এই অঞ্চলের গুরুত্ব অনেক। ভবিষ্যতে কোনো সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হলে, এই অঞ্চলটি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
বৈঠকে তাইওয়ানের বিষয়টিও আলোচনায় আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তাইওয়ানকে চীন নিজেদের অবিচ্ছেদ্য অংশ মনে করে। তাইওয়ানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখা দেশগুলোর সংখ্যা ধীরে ধীরে কমিয়ে আনছে চীন। গত বছর, নাউরু তাইওয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেছে। বর্তমানে তাইওয়ানের সঙ্গে মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ, পালাউ এবং টুভালুর কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে।
এই অঞ্চলের দেশগুলো আকারে ছোট হলেও, চীনের জন্য এর গুরুত্ব অনেক। কারণ, এখানে গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্র পথ রয়েছে, যা বাণিজ্য এবং সামরিক দিক থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা