যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি-তে অভিবাসন নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন বিতর্ক। শহরটি নিজেদের ‘অভয়ারণ্য নগরী’ হিসেবে ঘোষণা করলেও, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে পরিস্থিতি বদলে যায়।
ট্রাম্প প্রশাসনের কড়া অভিবাসন নীতির কারণে এখন এখানকার অভিবাসীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম উদ্বেগ। মেয়র সহ স্থানীয় প্রশাসনের নীরবতা অনেককে হতাশ করেছে, যা সেখানকার অভিবাসন অধিকার কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
ওয়াশিংটন ডিসি-র মেয়র একসময় শহরটিকে ‘গর্বিত অভয়ারণ্য নগরী’ বলতেন। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের কড়া নীতির কারণে এখন তিনি এই শব্দ ব্যবহার করা প্রায় বন্ধ করে দিয়েছেন।
স্থানীয় প্রশাসনের এই পরিবর্তন অভিবাসন নীতির প্রতি তাদের মনোভাবের ইঙ্গিত দেয় বলে অনেকে মনে করেন। বর্তমানে, শহরটিতে বসবাস করা অভিবাসীদের মধ্যে অনেকেই তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত।
সোলেদাদ নামের একজন অভিবাসী, যিনি কয়েক দশক ধরে ডিসি-তে বসবাস করছেন, তার কথা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি অস্থায়ী সুরক্ষা মর্যাদা (টিপিএস)-এর অধীনে কাজ করেন।
কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি পরিবর্তনের কারণে তার এবং আরও অনেকের সুরক্ষা হুমকির মুখে পড়েছে। সোলেদাদের মতো অনেকেই মনে করেন, স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নীরবতা তাদের একরকম পরিত্যক্ত হওয়ার অনুভূতি এনে দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওয়াশিংটন ডিসি-র এই পরিবর্তন সেখানকার ফেডারেল কাঠামোর কারণেও হতে পারে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য শহরের মতো এখানকার স্থানীয় সরকার রাজ্যের কাছ থেকে তেমন সমর্থন পায় না।
ফলে, কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কোনো সংঘাতে যাওয়া তাদের জন্য কঠিন। অভিবাসন অধিকার কর্মীরা মনে করেন, স্থানীয় কর্তৃপক্ষের এই নীরবতা অভিবাসী সম্প্রদায়ের জন্য ক্ষতিকর।
তারা বলছেন, স্থানীয় কর্মকর্তাদের সমর্থন ছাড়া অভিবাসীদের পক্ষে তাদের অধিকার রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে।
সম্প্রতি, অভিবাসন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস) কর্মকর্তাদের তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় অভিবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক আরও বেড়েছে। অনেকে মনে করছেন, শহর কর্তৃপক্ষ তাদের অধিকার রক্ষায় যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
ডিসির এই পরিস্থিতি সেখানকার অভিবাসীদের জীবনযাত্রায় গভীর প্রভাব ফেলেছে। অনেকে ভয়ে তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হওয়ার কথা বলছেন।
শহরের অনেক বাসিন্দা এখন তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন, কারণ ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর নীতিগুলো তাদের জীবনকে আরও কঠিন করে তুলেছে।
এ অবস্থায়, ওয়াশিংটন ডিসি-র অভিবাসন নীতি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন এবং কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যেকার সম্পর্কও এখন আলোচনার বিষয়।
তথ্য সূত্র: সিএনএন