গাজায় এখনো বন্দী থাকা জিম্মিদের মুক্তির জন্য আকুল আবেদন জানাচ্ছেন মুক্তি পাওয়া ইসরায়েলি জিম্মিরা, জীবন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ।
ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের ভয়াবহতা এখনো বিদ্যমান। গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় জিম্মি হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে মুক্তি পাওয়া কয়েকজন তাদের দুঃসহ অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেছেন। একইসাথে, গাজায় এখনো বন্দী থাকা জিম্মিদের জীবন নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তারা।
মুক্তি পাওয়া ব্যক্তিদের অনেকেই এখন তাদের মুক্তি ও নিরাপদে প্রত্যাবর্তনের জন্য বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন।
কয়েক মাস আগে মুক্তি পাওয়া কিথ সিগেল নামের একজন জানান, হামাসের বন্দী হিসেবে কাটানো ৪’শ ৮৪ দিনের স্মৃতি এখনো তাকে তাড়া করে ফেরে। গাজার সুড়ঙ্গে বন্দী থাকাকালীন শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেখানকার পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ ছিল যে তা এখনো তার মন থেকে মুছতে পারছেন না।
বর্তমানে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর অভিযানগুলো চলমান থাকায়, সেখানকার জিম্মিদের জীবন আরও বেশি ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে বলে তিনি মনে করেন।
সিগেলের মতো, ওমর শেম-তোভ নামের আরেকজন মুক্তি পাওয়া জিম্মিও গভীর মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছেন। তিনি বলেন, “প্রতিবার খাবার খাওয়ার সময় আমার মনে হয়, যারা এখনো বন্দী, তারা হয়তো খাবার পাচ্ছে না। গোসল করার সময় মনে হয়, তাদের হয়তো সেই সুযোগটুকুও নেই।”
তিনি আরও বলেন, “আমি অনুভব করতে পারি, যেন আমার শ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে।”
জানা যায়, হামাস গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে ২৫১ জনকে জিম্মি করে। মুক্তির পর সিগেল ও শেম-তোভ তাদের নতুন জীবন উৎসর্গ করেছেন, গাজায় আটকে পড়া জিম্মিদের মুক্ত করতে।
তাদের মতে, জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
যুদ্ধ শুরুর ৬০০ দিন পার হওয়ার পর, মুক্তি পাওয়া জিম্মিরা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা এখনো জিম্মিদের মুক্তির জন্য একটি চুক্তির আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা তেল আবিবে বিক্ষোভ করেছেন এবং মার্কিন দূতাবাস সহ বিভিন্ন স্থানে জমায়েত হয়ে ইসরায়েলি সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করছেন।
সিগেল জানিয়েছেন, তিনি তার বন্দী জীবনের কথা এখনো ভোলেননি। তার বন্দী জীবনের সঙ্গী, ৪’শ ৮ বছর বয়সী ওমরি মিরানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, মিরান তার পরিবারের কথা ভেবে সবসময় উদ্বিগ্ন থাকতেন।
জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন সিগেল ও শেম-তোভ। তারা উভয় নেতার কাছে জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, মুক্তি পাওয়া জিম্মিরা তাদের দুঃসহ অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেছেন এবং গাজায় আটকে পড়া জিম্মিদের জীবন নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, জিম্মিদের মুক্ত করাই এখন প্রধান অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।
তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম