লেবাননের সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থে ইসরায়েলি সৈন্য প্রত্যাহার করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নাওয়াজ সালাম।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ইসরায়েলের সামরিক উপস্থিতি দেশটির স্থিতিশীলতাকে দুর্বল করে দিচ্ছে।
সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সালাম বলেন, তিনি চান যুক্তরাষ্ট্র যেন ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করে অবিলম্বে দক্ষিণ লেবাননের পাঁচটি স্থান থেকে তাদের সৈন্য প্রত্যাহার করে নেয়।
গত নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র-মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়।
প্রধানমন্ত্রী সালাম জোর দিয়ে বলেন, লেবানন সেই চুক্তির শর্তগুলো যথাযথভাবে মেনে চলছে, এবং দেশটির সেনাবাহিনী দক্ষিণাঞ্চল ও সীমান্ত এলাকায় তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করছে।
সালাম আরও জানান, হিজবুল্লাহও চুক্তির প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং তারা অস্ত্র ব্যবহারের একমাত্র অধিকার লেবাননের সেনাবাহিনীর হাতে ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছে।
তবে তার অভিযোগ, ইসরায়েল তাদের প্রতিশ্রুতি রাখেনি।
তিনি বলেন, “লেবাননে ইসরায়েলের উপস্থিতি সবার জন্য একটি ‘লাল রেখা’। এটা শুধু হিজবুল্লাহর বিষয় নয়।
প্রধানমন্ত্রী সালামের মতে, ইসরায়েলের যুক্তি হলো, তারা ওই পাঁচটি স্থানে অবস্থান করছে যাতে করে তারা দক্ষিণ লেবাননের পরিস্থিতি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পারে।
কিন্তু স্যাটেলাইট চিত্র, ক্যামেরাযুক্ত ড্রোন এবং গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের যুগে এখন আর সৈন্যদের সরাসরি উপস্থিতির প্রয়োজন নেই।
সালাম বলেন, “ইসরায়েলের এই উপস্থিতি রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিকর।
এটা আমার সরকারের জন্য সমস্যা তৈরি করছে।
আমরা চাই, কাল বিলম্ব না করে ইসরায়েল এখান থেকে চলে যাক।
যদিও যুক্তরাষ্ট্র-মধ্যস্থতায় হওয়া চুক্তির অংশ হিসেবে লেবানন থেকে সেনা সরানোর কথা, কিন্তু ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হিজবুল্লাহর উপস্থিতির কারণে এখনো লেবাননের সেনাবাহিনী ওই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটস মার্চ মাসে বলেছিলেন, “আমরা উত্তর অঞ্চলের বাসিন্দাদের রক্ষার জন্য ওই পাঁচটি স্থানে অনির্দিষ্টকালের জন্য থাকব, ভবিষ্যতের আলোচনা যাই হোক না কেন।
যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স এবং জাতিসংঘের সদস্যরাও জড়িত রয়েছে।
সালাম জানান, “আমি নিশ্চিত, তারা প্রমাণ করতে পারবে যে লেবানন তার প্রতিশ্রুতিগুলো রক্ষা করেছে, যেখানে ইসরায়েল তা করেনি।
উল্লেখ্য, সালাম গত জানুয়ারিতে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
এর আগে তিনি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে দক্ষিণ আফ্রিকার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগের শুনানিতে সভাপতিত্ব করেছিলেন।
সংস্কারপন্থী হিসেবে পরিচিত সালামের প্রধান লক্ষ্য হলো, দুর্নীতি নির্মূল করা, হিজবুল্লাহ ও ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে নিরস্ত্র করে দেশের সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধার করা।
তিনি সাক্ষাৎকারে বলেন, “সরকারের মূল লক্ষ্য হলো, পুরো ভূখণ্ডে অস্ত্রের একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা।
তথ্য সূত্র: সিএনএন