মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার ঘোষণা করেছে যে তারা সেইসব বিদেশি কর্মকর্তাদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করবে, যারা মার্কিন কোম্পানি ও নাগরিকদের বাকস্বাধীনতা “নিয়ন্ত্রণ” করার চেষ্টা করেন। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারকো রুবিও বুধবার এক বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।
তাঁর মতে, বিদেশি সরকারগুলোর এই ধরনের পদক্ষেপ “অগ্রহণযোগ্য”।
মার্কিন সরকারের অভিযোগ, কিছু বিদেশি সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সামাজিক মাধ্যম কোম্পানিগুলোর ওপর তাদের প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত বিষয়বস্তু নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করছে। রুবিও বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে সুরক্ষিত বাকস্বাধীনতার অধিকার খর্ব হচ্ছে।
তিনি বলেন, “আমরা যেমন দেশে সেন্সরশিপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি, তেমনই দেখছি বিদেশি সরকারগুলো এই কাজটি করছে।”
যদিও রুবিও নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তি বা দেশের নাম উল্লেখ করেননি, তবে এর আগে যুক্তরাষ্ট্র সরকার যুক্তরাজ্য, জার্মানি এবং ব্রাজিলের মতো দেশগুলোর সমালোচনা করেছে।
তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, এই দেশগুলো হয়রানির উদ্দেশ্যে অথবা রাজনৈতিক কারণে কিছু নির্দিষ্ট বিষয় অনলাইনে প্রকাশ করতে বাধা দেয়।
এই পদক্ষেপ এমন এক সময়ে নেওয়া হচ্ছে, যখন মার্কিন প্রশাসন ফিলিস্তিনিপন্থী বিক্ষোভের সঙ্গে জড়িত আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। এছাড়াও, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাঠ্যক্রমের ওপর আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে তারা।
সম্প্রতি, তুরস্কের এক শিক্ষার্থী, রুমিজা ওজতুর্কের গ্রেপ্তার এবং আটকের ঘটনা মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। রুমিজা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন বন্ধের আহ্বান জানিয়ে একটি নিবন্ধে স্বাক্ষর করেছিলেন।
মার্কিন প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে অনেকে ভিন্নমত দমনের চেষ্টা হিসেবে দেখছেন। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, সরকারের এই ধরনের পদক্ষেপ বাকস্বাধীনতাকে খর্ব করে এবং ভিন্নমতের কণ্ঠরোধ করে।
অন্যদিকে, ফিলিস্তিনপন্থী সংগঠনগুলোও ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে তাদের ওপর আরোপিত বিধিনিষেধের নিন্দা জানিয়েছে।
তাদের অভিযোগ, ইহুদিবিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অজুহাতে তাদের মৌলিক অধিকার খর্ব করা হচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র সরকার বাকস্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে সমর্থন করে এবং বিদেশি সরকারগুলোকে এই বিষয়ে আরও সতর্ক থাকার বার্তা দিচ্ছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা