বিমানের মাঝের সিটে বসে বিরক্ত হন? তাহলে এই টিপসগুলো আপনার জন্য!

বিমান ভ্রমণের সময় মাঝের সিটে বসাটা অনেকের কাছেই একটা দুঃস্বপ্ন। জানালার পাশে বসার সুযোগ নেই, আবার সহজে উঠা-নামা করারও উপায় নেই। কিন্তু কিছু কৌশল জানা থাকলে এই সিটটিকেও আরামদায়ক করে তোলা সম্ভব।

অভিজ্ঞ বিমানবালাদের পরামর্শে, মাঝের সিটে বসেও কিভাবে যাত্রা উপভোগ করবেন, সেই বিষয়ে কিছু জরুরি টিপস নিয়ে আজকের এই আলোচনা।

আসুন, জেনে নেওয়া যাক কিভাবে মাঝের সিটটিকে আরও উপভোগ্য করে তোলা যায়:

১. মানসিকতা পরিবর্তন করুন: শুরুতেই মাঝের সিট নিয়ে নেতিবাচক ধারণা ঝেড়ে ফেলুন। এটিকে বরং নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ হিসেবে দেখুন।

কে জানে, আপনার পাশের সিটে বসা মানুষটি হয়তো আপনার ভালো বন্ধু হয়ে উঠবে! যদি কারো সাথে কথা বলার মুড না থাকে, তবে নিজের মত করে প্রস্তুত থাকুন।

২. আর্মরেস্টের অধিকার: মাঝের সিটে বসার সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, আপনি দুটি আর্মরেস্টই ব্যবহার করতে পারবেন। তাই নিজের স্থানটি বুঝে নিন।

অন্য কেউ আপনার স্থানে জায়গা নিতে চাইলে, তাদের সাথে ভদ্রভাবে কথা বলুন। প্রয়োজনে নিজের কনুই সামান্য হেলান দিয়ে জানান দিন যে আপনিও এই স্থানের অংশীদার।

* পরামর্শ: হালকা ও বহনযোগ্য একটি কম্বল সঙ্গে রাখুন। সিটে বসার পরে এটি নিজের চারপাশে মুড়িয়ে নিন, যেন মনে হয় একটি ব্যক্তিগত জগৎ তৈরি হয়েছে।

৩. ঘুমের ব্যবস্থা: দীর্ঘ ভ্রমণের ক্লান্তি দূর করতে পর্যাপ্ত ঘুমের বিকল্প নেই। আরামদায়ক ঘুমের জন্য কিছু প্রস্তুতি নেওয়া যেতে পারে:

• গলায় সাপোর্ট দেয় এমন বালিশ নিন: এটি আপনার মাথাকে একদিকে কাত হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করবে।
• আই মাস্ক ব্যবহার করুন: চোখের মাস্ক আপনার চারপাশের আলো থেকে মুক্তি দেবে এবং দ্রুত ঘুম আসতে সাহায্য করবে।

৪. ব্যক্তিগত জগৎ তৈরি করুন: আরামের জন্য শব্দ-নিরোধক হেডফোন এবং আই মাস্কের মতো জিনিসগুলো সঙ্গে নিন। এটি আপনাকে বাইরের কোলাহল থেকে দূরে রাখবে এবং নিজের মতো সময় কাটাতে সাহায্য করবে।

• শব্দ নিরোধক হেডফোন: ভালো মানের শব্দ-নিরোধক হেডফোন আপনার যাত্রা আরও আনন্দ-দায়ক করে তুলবে।
• আই মাস্ক: ঘুমের সময় চোখের মাস্ক ব্যবহার করলে আলো আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারবে না।

৫. শরীরের আরাম: মাঝের সিটে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন কমে যেতে পারে। এই সমস্যা এড়াতে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে:

• সিট কুশন: সিট কুশন সিটের চাপ কমাতে সাহায্য করে।
• কমপ্রেশন মোজা: কমপ্রেশন মোজা পায়ের ফোলাভাব কমাতে সহায়ক।

৬. স্বনির্ভর হন: বিমানে বসে অন্যদের উপর নির্ভর করাটা অনেক সময় বিরক্তির কারণ হতে পারে। তাই নিজের প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো হাতের কাছে রাখুন:

• পানি এবং স্ন্যাকস: নিজের খাবার ও পানীয় সঙ্গে নিন। এতে অন্যদের উপর নির্ভর করতে হবে না।
• পাওয়ার ব্যাংক: মোবাইল বা অন্যান্য ডিভাইস চার্জ করার জন্য একটি পাওয়ার ব্যাংক সঙ্গে রাখুন।

৭. বিনোদনের ব্যবস্থা: যদি বিমানের নিজস্ব বিনোদন ব্যবস্থা কাজ না করে, তাহলে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। নিজের পছন্দের ছবি বা সিনেমা ডাউনলোড করে রাখতে পারেন অথবা বই পড়তে পারেন।

• ই-রিডার: বই পড়ার জন্য একটি ই-রিডার নিতে পারেন।
• ট্যাবলেট: মুভি বা ওয়েব সিরিজ দেখার জন্য একটি ট্যাবলেট সাথে রাখতে পারেন।

এই টিপসগুলো অনুসরণ করে, আপনিও আপনার বিমান যাত্রা আরও আনন্দ-দায়ক করে তুলতে পারেন। ভালো ভ্রমণের জন্য প্রস্তুত থাকুন!

তথ্য সূত্র: Travel and Leisure