যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা (আইসিই)-কে ডেমোক্রেটিক শহরগুলোতে ব্যাপক ধরপাকড় চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি তিনি তার সামাজিক মাধ্যম ‘ট্রুথ সোস্যাল’-এ এক পোস্টে এই নির্দেশ দেন। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
ট্রাম্পের এই নির্দেশের মূল উদ্দেশ্য হলো, আমেরিকায় বসবাস করা অবৈধ অভিবাসীদের বিতাড়ন প্রক্রিয়াকে আরও জোরদার করা। তিনি বিশেষ করে লস অ্যাঞ্জেলেস, শিকাগো এবং নিউ ইয়র্কের মতো বড় শহরগুলোতে এই অভিযান জোরদার করতে বলেছেন, যেখানে বিপুল সংখ্যক অনথিভুক্ত অভিবাসী বসবাস করেন। ট্রাম্পের মতে, তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা নির্বাচনে কারচুপি করার জন্য এবং কল্যাণ রাষ্ট্রকে প্রসারিত করার জন্য অবৈধ অভিবাসীদের ব্যবহার করছে। তবে তিনি তার দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেননি।
হোয়াইট হাউস প্রতিদিন প্রায় ৩,০০০ অভিবাসন-সংক্রান্ত গ্রেপ্তারের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। যদিও ট্রাম্প প্রশাসন প্রকাশ্যে তাদের এই কার্যক্রমের কথা ঘোষণা করেছে, তবে সূত্রের খবর অনুযায়ী, তারা এই লক্ষ্য পূরণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের ফলে ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। লস অ্যাঞ্জেলেসে ফেডারেল অভিযানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শিত হয়েছে, যেখানে ন্যাশনাল গার্ড এবং মেরিন সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছিল। সারা দেশে ‘নো কিংস’ প্রতিবাদের অংশ হিসেবে কয়েক হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে আসে।
ট্রাম্পের এই অভিবাসন নীতির কারণে খামার ও হোটেলসহ বিভিন্ন শিল্পে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে, যেখানে অভিবাসী শ্রমিকদের ওপর নির্ভরশীলতা বেশি। অনেক কৃষক এবং হোটেল মালিক অভিযোগ করেছেন যে, অভিবাসন নীতির কারণে তাদের দীর্ঘদিনের কর্মীরা কাজ ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন, যা তাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি ডেকে আনছে। ট্রাম্প নিজেও স্বীকার করেছেন যে, তার অভিবাসন নীতি এই খাতগুলোতে প্রভাব ফেলছে। তিনি তার সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, ‘আমাদের কৃষক এবং হোটেল ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা বলছেন যে, অভিবাসন নীতি তাদের ভালো কর্মীদের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিচ্ছে, এবং সেই শূন্যতা পূরণ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। আমাদের অবশ্যই কৃষকদের রক্ষা করতে হবে, তবে আমেরিকার অপরাধীদের বিতাড়িত করতে হবে। পরিবর্তন আসছে!’
তথ্যসূত্র: সিএনএন