এবারের আন্তর্জাতিক সঙ্গীতের জগৎ থেকে আসা একটি গুরুত্বপূর্ণ খবর হলো, জনপ্রিয় ব্রিটিশ শিল্পী এড শিরানের বিরুদ্ধে আনা কপিরাইট মামলাটি খারিজ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট। মার্ভিন গে-এর বিখ্যাত গান ‘লেটস গেট ইট অন’-এর স্বত্বাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছিল একটি কোম্পানি, যার প্রেক্ষিতে এই আইনি লড়াই চলছিল।
জানা যায়, স্ট্রাকচার্ড অ্যাসেট সেলস নামক একটি সংস্থা, যারা মার্ভিন গে-এর গানের রয়্যালটির একটি অংশীদার, তারা এড শিরানের ‘থিংকিং আউট লাউড’ গানটির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিল। তাদের দাবি ছিল, শিরানের গানটি মার্ভিন গে-এর গানের সুর ও তাল নকল করে তৈরি করা হয়েছে।
যদিও এর আগে বিভিন্ন সময় এই মামলার শুনানিতে শিরানের পক্ষেই রায় এসেছিল। এমনকি, ২০১৩ সালে একটি জুরিবোর্ডও জানিয়েছিল যে, শিরানের গানটি মূল গানের কপিরাইট লঙ্ঘন করেনি। উল্লেখ্য, ‘থিংকিং আউট লাউড’ গানটি ২০১৬ সালে গ্র্যামি পুরস্কার জিতেছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্তের ফলে নিউইয়র্ক ভিত্তিক ২য় ইউএস সার্কিট কোর্ট অফ আপিলসের রায় বহাল রইল, যা আগে শিরানের পক্ষেই এসেছিল। সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানিতে প্রধান প্রশ্ন ছিল, আপিল আদালত ১৯০৯ সালের কপিরাইট আইনের বিষয়ে ইউএস কপিরাইট অফিসের ব্যাখ্যার প্রতি অতিরিক্ত মনোযোগ দিয়েছিল কিনা।
আদালতে স্ট্রাকচার্ড অ্যাসেট সেলস যুক্তি দেয় যে, শিরানের গানটি ‘লেটস গেট ইট অন’ গানের কিছু উপাদান, যেমন ড্রামস এবং গানের গতির নকল করেছে। তাদের মতে, এই মামলার ফলাফলের ওপর আরও অনেক গানের স্বত্বাধিকারও নির্ভরশীল। তাদের আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্টে বলেছিলেন, “হাজার হাজার কিংবদন্তি সঙ্গীত রচয়িতা এবং শিল্পীর অধিকার, জনপ্রিয় সঙ্গীতের সবচেয়ে প্রিয় এবং স্থায়ী কিছু সৃষ্টিকর্ম এই বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে।”
অন্যদিকে, শিরানের আইনজীবীরা যুক্তি দেন যে, মূল গানের স্বত্ব রক্ষার জন্য যে হাতে লেখা গানের স্বরলিপি জমা দেওয়া হয়েছিল, সেখানে গানের গতির উল্লেখ ছিল না। এছাড়াও, তারা কপিরাইট আইনের ভাষ্যকে স্পষ্ট উল্লেখ করে আদালতের কাছে কপিরাইট অফিসের ব্যাখ্যার ওপর নির্ভর না করার আবেদন জানান।
এই মামলার রায় সঙ্গীতশিল্পীদের কপিরাইট সুরক্ষার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করল। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গানের স্বত্বাধিকার এবং শিল্পীর অধিকার রক্ষার বিষয়টি আরও একবার সামনে এল।
তথ্য সূত্র: সিএনএন