মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা শুনানির জন্য প্রস্তুত হচ্ছে, যেখানে ধর্মভিত্তিক কিছু ‘ক্রাইসিস প্রেগন্যান্সি সেন্টার’-এর বিরুদ্ধে রাজ্যের কর্তৃপক্ষের তল্লাশি পরোয়ানা জারির ক্ষমতা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার, আদালত এই বিষয়ে শুনানির সিদ্ধান্ত নেয়, যা দেশের বিভিন্ন মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
মামলার সূত্রপাত হয়েছে নিউ জার্সির ‘ফার্স্ট চয়েস উইমেন’স রিসোর্সেস সেন্টারস’ নামক একটি অলাভজনক সংস্থার আপিলের মাধ্যমে। এই সংস্থাটি রাজ্যে পাঁচটি ‘ক্রাইসিস প্রেগন্যান্সি সেন্টার’ পরিচালনা করে। নিউ জার্সির অ্যাটর্নি জেনারেল এই সংস্থার বিরুদ্ধে একটি তল্লাশি পরোয়ানা জারি করেছিলেন, যার বিরুদ্ধে তারা আদালতে যায়।
এই সেন্টারগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তারা তাদের বিপণন কৌশলের মাধ্যমে রোগীদের বিভ্রান্ত করেছে এবং তাদের এমন ধারণা দিয়েছে যে সেখানে গর্ভপাতের সুযোগ রয়েছে, যদিও বাস্তবে তা ঘটে না।
আদালতে উত্থাপিত মূল প্রশ্ন হলো, কোনো রাজ্যে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার আছে কিনা, নাকি গ্রাহক সুরক্ষা এবং প্রতারণা প্রতিরোধের স্বার্থে তাদের তথ্যাদি প্রকাশ করা যেতে পারে। অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় এই সেন্টারগুলোর বিজ্ঞাপন, অনুদান সংগ্রহ এবং চিকিৎসা কর্মীদের সনাক্ত করার মতো বিষয়গুলো জানতে চেয়েছিল।
অন্যদিকে, সংস্থাটি এটিকে তাদের দাতা তালিকা চেয়ে পাঠানোর শামিল হিসেবে বিবেচনা করছে, যা তাদের প্রথম সংশোধনীতে দেওয়া অধিকারের লঙ্ঘন।
যদি আদালতের এই বিষয়ে ভিন্নমত হয়, তাহলে তা সম্ভবত একটি পুরোনো মামলার সঙ্গে বিরোধ তৈরি করবে। ২০২১ সালে সুপ্রিম কোর্ট একটি রায়ে জানিয়েছিল, কোনো সংস্থার দাতাদের নাম প্রকাশ করার জন্য ক্যালিফোর্নিয়ার একটি আইনের অনুমোদন দেওয়া যায় না।
এই মামলার রায় ভবিষ্যতে কিভাবে ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং গ্রাহক সুরক্ষার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা হবে, সেই বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই মামলার রায় শুধু একটি রাজ্যের কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা নয়, বরং সারা দেশের ধর্মীয় সংগঠনগুলোর অধিকারের উপরও প্রভাব ফেলবে। এখন সবার দৃষ্টি আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের দিকে, যা সম্ভবত এই বিতর্কিত বিষয়ে একটি পরিষ্কার ধারণা দেবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন