যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ও তুষারপাতের কারণে বিপর্যস্ত জনজীবন, মৃতের সংখ্যা বাড়ছে
যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানা শক্তিশালী ঝড়গুলো দেশটির পূর্বাঞ্চলে টর্নেডো এবং মধ্যাঞ্চলে তীব্র তুষারঝড়ের সৃষ্টি করেছে। এতে মিসিসিপিতে তিনজন নিহত হয়েছেন এবং টেক্সাসে দাবানল দেখা দিয়েছে। বুধবার পাওয়া খবর অনুযায়ী, দেশটির পূর্বাঞ্চলে টর্নেডোর সতর্কতা জারি করা হয়েছে, আর মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলে ভারী তুষারপাতের কারণে অনেক রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
মিসিসিপি অঙ্গরাজ্যে ঝড়ের কারণে তিনজন নিহত হয়েছেন। স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ম্যাডিসন কাউন্টিতে একটি বিদ্যুতের খুঁটি ছিঁড়ে পড়লে একজন নিহত হন এবং অন্যজন গাছের নিচে চাপা পড়ে মারা যান। এছাড়া ক্লার্ক কাউন্টিতে এক নারীর ওপর গাছের ডাল ভেঙে পড়লে তিনি নিহত হন।
এদিকে, টেক্সাসের উপকূলীয় অঞ্চলে তীব্র বাতাস ও শুকনো আবহাওয়ার কারণে বেশ কয়েকটি স্থানে দাবানল দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে সান প্যাট্রিসিও কাউন্টিতে অন্তত ২০টি বাড়ি ও অন্যান্য স্থাপনা পুড়ে গেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, দক্ষিণ-মধ্য টেক্সাসে এখনো তীব্র আবহাওয়ার পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
অন্যদিকে, ওকলাহোমা অঙ্গরাজ্যে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় পূর্বাঞ্চলে অগ্রসর হচ্ছে, যার ফলে ক্যারোলিনাসহ বিভিন্ন রাজ্যে টর্নেডোর সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। আবহাওয়াবিদ বিল বান্টিং জানিয়েছেন, এই ঝড়গুলোতে একদিকে যেমন তীব্র বজ্রঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে, তেমনি শীতকালীন আবহাওয়ার কারণে তুষারপাতেরও সম্ভবনা রয়েছে।
মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলে তুষারঝড়ের কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নেব্রাস্কা, মিনেসোটা এবং আইওয়া অঙ্গরাজ্য। নেব্রাস্কায় প্রায় ১০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত তুষারপাত হয়েছে এবং বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১০৫ কিলোমিটার পর্যন্ত। এর ফলে দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় অনেক রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। মিনেসোটার মিনিয়াপলিস শহরে মৌসুমের সবচেয়ে ভারী তুষারপাত হয়েছে, যা প্রায় ১৮.৮ সেন্টিমিটার পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়াও, আইওয়া রাজ্যে তুষারের কারণে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে অন্তত ৬৮টি দুর্ঘটনা ঘটেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলে ঝড়ের কারণে বিমান চলাচলও ব্যাহত হয়েছে। ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন জানিয়েছে, ওই অঞ্চলের প্রধান বিমানবন্দরগুলোতে ফ্লাইট বিলম্বিত হতে পারে অথবা বাতিলও করা হতে পারে। বুধবার প্রায় ৬০০ ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা মনে করিয়ে দেয়। যেমন, ঘূর্ণিঝড় ও বন্যায় বাংলাদেশের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়, তেমনি যুক্তরাষ্ট্রের এই ঝড়গুলো সেখানকার মানুষের জীবন ও জীবিকার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস