ফিলিপাইনের সাবেক রাষ্ট্রপতি রদ্রিগো দুয়ার্তে’র মাদক বিরোধী অভিযান নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সমালোচনা চলছে।
২০১৬ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই তিনি মাদক নির্মূলের নামে একটি অভিযান শুরু করেন, যা ‘ড্রাগ ওয়ার’ নামে পরিচিতি লাভ করে।
এই অভিযানে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত হয় প্রায় ৩০ হাজার সাধারণ মানুষ।
অভিযানে নিহতদের অধিকাংশই ছিলেন দরিদ্র ও শহরের বস্তিবাসী।
পুলিশের দাবি ছিল, আত্মরক্ষার্থে গুলি চালাতেই তারা বাধ্য হয়েছিলেন।
কিন্তু মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অনুসন্ধানে জানা যায়, পুলিশ প্রায়ই মিথ্যা তথ্য দিতো এবং ঘটনার প্রমাণ নষ্ট করত।
অনেক ক্ষেত্রে, ভিকটিমদের কাছে মাদকদ্রব্য ও আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া গেছে বলে দাবি করা হলেও, প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নিহতদের কাছে কোনো অস্ত্র ছিল না এবং তারা কোনো প্রতিরোধের চেষ্টাও করেননি।
এমনকি, নিহতদের শরীরে একাধিক গুলির ক্ষত পাওয়া গেছে, যা পুলিশের আত্মরক্ষার দাবির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) দুয়ার্তের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত শুরু করেছে।
তার বিরুদ্ধে হত্যার নির্দেশ দেওয়া, হত্যাকাণ্ডকে উৎসাহিত করা এবং পুলিশকে নির্বিচারে কাজ করার সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
দুয়ার্তে ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসায়ীদের হত্যার ঘোষণা দেন এবং সাধারণ নাগরিকদের মাদকাসক্তদের হত্যা করতে উৎসাহিত করেন।
যদিও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই হত্যাকাণ্ডগুলোর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে, তবুও দুয়ার্তে তার এই অভিযান থেকে সরে আসেননি।
তিনি বরং বলেছিলেন, ‘রাস্তা থেকে শেষ মাদক ব্যবসায়ীকে নির্মূল না করা পর্যন্ত বহু মানুষ মারা যাবে।’
এমনকি জানা যায়, অভিযানে জড়িত কর্মকর্তাদের প্রতিটি হত্যার জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করা হতো।
তবে, দুয়ার্তে বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তিনি যদিও মেয়র থাকাকালীন সময়ে অপরাধীদের নির্মূল করার জন্য একটি ‘মৃত্যুদল’ (death squad) গঠন করার কথা স্বীকার করেছেন।
সম্প্রতি, সিনেট শুনানিতে দুয়ার্তে মাদক বিরোধী অভিযানের সম্পূর্ণ দায়ভার নিজের কাঁধে তুলে নেন।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোতে এই ঘটনা ব্যাপক গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।