যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার প্রতিশ্রুতি ভেস্তে যাওয়ার পরেও, কিউবা ভ্যাটিকানের মধ্যস্থতায় ৫53 জন বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে। সোমবার দেশটির সর্বোচ্চ বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ এই খবর জানায়। কিউবার সরকারি মিডিয়া জানিয়েছে, মুক্তি পাওয়া সকল বন্দীকে ইতোমধ্যে কারামুক্ত করা হয়েছে।
জানুয়ারী মাসে হাভানা জানায়, ক্যাথলিক চার্চের মধ্যস্থতায় তারা বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে ‘রাজনৈতিক বন্দীদের’ মুক্তির বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবাদের কালো তালিকা থেকে নিজেদের নাম অপসারণের বিষয়ে রাজি হয়েছিল। কিন্তু ক্ষমতা গ্রহণের পরেই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করেন। তিনি নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করেন এবং এই প্রক্রিয়াটি সাময়িকভাবে স্থগিত করে দেন।
কিউবার সুপ্রিম পিপলস কোর্টের কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে যে, মুক্তি পাওয়া ৫53 জন মানুষ এখন সম্পূর্ণভাবে স্বাধীন এবং এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। যদিও বাইডেন প্রশাসন এই চুক্তির মূল বিষয় হিসেবে ‘রাজনৈতিক বন্দীদের’ মুক্তির কথা বলছিল, কিউবার কর্মকর্তারা মুক্তি পাওয়া ব্যক্তিদের ‘বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্ত ৫53 জন’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
অধিকার সংস্থাগুলো গত এক সপ্তাহ ধরে কিছু বন্দীর মুক্তি লক্ষ্য করেছে। তবে তাদের মধ্যে কেউ কেউ সাধারণ অপরাধী বলেও ধারণা করা হচ্ছে। ২০২১ সালের ১১ই জুলাই সরকার বিরোধী বিক্ষোভের সময় গ্রেপ্তার হওয়া শত শত বিক্ষোভকারীকে মুক্তি দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ক্যাথলিক চার্চ এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো দীর্ঘদিন ধরে কিউবার উপর আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করে আসছিল।
ঐ বিক্ষোভগুলো ছিল ফিদেল কাস্ত্রোর ১৯৫৯ সালের বিপ্লবের পর থেকে হওয়া সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ। অর্থনৈতিক দুরবস্থা, খাদ্য সংকট এবং কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় সরকারের ব্যর্থতার কারণে এই বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়। বিক্ষোভকারীরা রাজনৈতিক পরিবর্তন এবং আরও বেশি স্বাধীনতা চেয়েছিল। কিউবার কর্তৃপক্ষ দাবি করে যে, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর এবং রাষ্ট্রদ্রোহের মতো অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল। পর্যবেক্ষক দলগুলোর ধারণা, গত সপ্তাহে প্রায় ২০০ বিক্ষোভকারীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তবে তথ্যের সীমাবদ্ধতার কারণে এর সত্যতা যাচাই করা কঠিন। ভ্যাটিকান-মধ্যস্থতায় হওয়া চুক্তির অধীনে মুক্তি পাওয়া ৫53 জন বন্দীর মধ্যে কতজন ২০২১ সালের বিক্ষোভের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তা সরকারি মিডিয়া রিপোর্টে স্পষ্ট করা হয়নি।
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা।