মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি টেসলা কেনার ঘোষণা করেছেন। কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে তিনি বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্কের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছেন। মাস্কের মালিকানাধীন কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বর্তমানে বেশ কঠিন সময় পার করছে।
সোমবার (গতকাল) মাস্কের সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম ‘এক্স’ (সাবেক টুইটার) ব্যবহারকারীদের জন্য কিছু সময়ের জন্য বন্ধ ছিল। একই দিনে টেসলার শেয়ারের দাম ১৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। এছাড়া, স্পেসএক্স-এর রকেট উৎক্ষেপণেও দেখা গেছে ব্যর্থতা।
ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার ইনডেক্স অনুসারে, সোমবার একদিনেই মাস্কের ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ ২৯ বিলিয়ন ডলার হ্রাস পেয়েছে।
সম্প্রতি মাস্ক রাজনীতি ও সরকারের সঙ্গে তার যোগাযোগ বৃদ্ধি করেছেন। এর পাশাপাশি, তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর এমন পরিস্থিতি নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলছেন। কেউ কেউ মনে করছেন, সরকারের নীতি নির্ধারণে মাস্কের অতি সক্রিয়তা তার ব্যবসায়ে প্রভাব ফেলছে।
এ বিষয়ে ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মাস্ক স্বীকার করেছেন, একইসঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের হয়ে কাজ করা এবং নিজের কোম্পানিগুলো পরিচালনা করাটা তার জন্য বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
শেয়ার বাজারে টেসলার দর পতন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। নভেম্বরে ট্রাম্প নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর, অনেক শেয়ারহোল্ডার আশা করেছিলেন মাস্কের সঙ্গে তার সুসম্পর্কের কারণে টেসলার জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হবে। বিশেষ করে, সরকারি বিধিনিষেধ শিথিল করা এবং ভর্তুকি পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু বাস্তবে তেমনটা ঘটেনি।
বর্তমানে টেসলার বিক্রি কমে যাচ্ছে, বিশেষ করে ইউরোপে। বিশ্লেষকদের মতে, এর প্রধান কারণ হলো বাজারের তীব্র প্রতিযোগিতা এবং মাস্কের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা। টেসলার গাড়ি এবং শোরুমগুলো বিক্ষোভকারীদের আক্রমণের শিকার হচ্ছে, এমনকি কিছু ক্ষেত্রে সহিংসতার ঘটনাও ঘটেছে। সম্প্রতি, বোস্টনে একটি টেসলা চার্জিং স্টেশনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় এবং ওরেগনে একটি টেসলা ডিলারশিপে গুলি করা হয়।
এদিকে, ‘এক্স’ -এর কারিগরি ত্রুটি নিয়ে মাস্কের দাবি, এটি সম্ভবত একটি সাইবার হামলার ফল। তবে সাইবার নিরাপত্তা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সাইবারশিয়েথের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এরিক নুনান সিএনএনকে জানিয়েছেন, হামলার কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে এখনো অপেক্ষা করতে হবে।
২০২২ সালের অক্টোবরে মাস্ক ৪৪ বিলিয়ন ডলারে ‘এক্স’ কিনেছিলেন। ফাইডেলিটির হিসাব অনুযায়ী, মাস্কের মালিকানায় আসার পর প্ল্যাটফর্মটির মূল্য প্রায় ৮০ শতাংশ কমে গেছে।
অন্যদিকে, স্পেসএক্সের স্টারশিপ রকেটের প্রথম দুটি উৎক্ষেপণই ব্যর্থ হয়েছে। সর্বশেষ উৎক্ষেপণে রকেট বিস্ফোরিত হয় এবং এর ধ্বংসাবশেষ কয়েক মাইল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। ফেডারেল এভিয়েশন অথরিটি (এফএএ) এখনো রকেটগুলোর এই ব্যর্থতার কারণ অনুসন্ধান করছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন