ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে চলমান যুদ্ধ বন্ধের উদ্দেশ্যে, যুক্তরাষ্ট্র ৩০ দিনের একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে।
সৌদি আরবের জেদ্দায় মার্কিন ও ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনার পর এই প্রস্তাব আসে।
যদিও চুক্তির বিস্তারিত এখনো প্রকাশ করা হয়নি, তবে এতে কী কী বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, তা জানা গেছে।
প্রস্তাবিত চুক্তির মূল বিষয় হলো এক মাসের জন্য পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতি।
কিয়েভ এর আগে শুধু আকাশ ও সমুদ্র পথে যুদ্ধবিরতির কথা বললেও, নতুন প্রস্তাবে স্থল যুদ্ধ বন্ধেরও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চুক্তিকে ‘মোট যুদ্ধবিরতি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
আলোচনার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা এবং গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ পুনরায় চালু করা।
ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হয়ে যাওয়ায় সামরিক সহায়তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
এই চুক্তির মাধ্যমে সেই সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র অবিলম্বে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান শুরু করতে এবং ইউক্রেনকে নিরাপত্তা সহায়তা দিতে রাজি হয়েছে।
তবে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রধান দাবি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা গ্যারান্টি।
অর্থাৎ, রাশিয়া যদি যুদ্ধবিরতি বা শান্তি চুক্তি লঙ্ঘন করে, তবে যুক্তরাষ্ট্র যেন ইউক্রেনকে রক্ষা করে।
কিন্তু চুক্তিতে নিরাপত্তা গ্যারান্টির কোনো উল্লেখ নেই।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জেদ্দার আলোচনাকে স্বাগত জানালেও, ইউক্রেনের জন্য ‘শক্তিশালী’ নিরাপত্তা গ্যারান্টি প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন।
জেলেনস্কি এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, নিরাপত্তা গ্যারান্টি নিয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এছাড়াও, ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ থেকে আয়ের ৫০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তরের জন্য ট্রাম্প চাপ সৃষ্টি করেছিলেন।
আলোচনায় এই বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
তবে, দুই প্রেসিডেন্ট দ্রুততম সময়ে ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ উন্নয়নের জন্য একটি চুক্তি করতে রাজি হয়েছেন।
চুক্তি অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতির সময় যুদ্ধবন্দী বিনিময়, বেসামরিক নাগরিকদের মুক্তি এবং জোরপূর্বক রাশিয়ায় স্থানান্তরিত ইউক্রেনীয় শিশুদের ফেরত পাঠানো হবে।
আলোচনার পর জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেন শান্তি চায়, তবে রাশিয়াকে রাজি করানোর দায়িত্ব যুক্তরাষ্ট্রের।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, এখন ‘বলের রাশিয়ার কোর্টে’।
এখন দেখার বিষয়, রাশিয়া এই অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি মেনে নেয় নাকি ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করার ঝুঁকি নেয়।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান