ফ্রান্সের প্রকাশনা সংস্থা ও লেখকদের সংগঠনগুলো মেটা’র (সাবেক ফেসবুক) বিরুদ্ধে তাদের স্বত্ব সংরক্ষিত কাজের অনুমতি ছাড়া আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রশিক্ষণে ব্যবহারের অভিযোগে মামলা করেছে। প্যারিসের একটি আদালতে এই মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, মেটা তাদের তৈরি করা জেনারেটিভ এআই মডেলকে প্রশিক্ষিত করতে কপিরাইট আইন লঙ্ঘন করে লেখক ও প্রকাশকদের কাজ ব্যবহার করেছে। ন্যাশনাল পাবলিশিং ইউনিয়ন, যা ফ্রান্সের বই প্রকাশকদের প্রতিনিধিত্ব করে, জানিয়েছে তাদের সদস্যদের অনেক কাজ মেটা’র ডেটা পুলে পাওয়া গেছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে, প্রকাশনা সংস্থাগুলো মেটা’র বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে।
শুধু তাই নয়, ন্যাশনাল ইউনিয়ন অফ অথর্স অ্যান্ড কম্পোজার্স নামক লেখকদের একটি সংগঠনও এই মামলার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এই সংগঠনের ৭০০ জনের বেশি লেখক, নাট্যকার এবং সুরকার সদস্য রয়েছেন। তাদের আশঙ্কা, এআই তাদের কাজ এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ব্যবহার করে নিজেদের প্রশিক্ষিত করছে। তাদের আরও উদ্বেগ হলো, এআই ‘নকল বই’ তৈরি করতে পারে, যা আসল বইয়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করবে।
মামলায় জড়িত তৃতীয় গোষ্ঠীটি হলো সোসিয়েতে দে জঁ দ্য লেত্র (Societe des Gens de Lettres), যারা লেখকদের প্রতিনিধিত্ব করে। এই সংগঠনটি মেটা’র তৈরি করা ডেটা ডিরেক্টরিগুলো সম্পূর্ণরূপে অপসারণের দাবি জানাচ্ছে, যা এআই মডেলকে প্রশিক্ষিত করতে ব্যবহার করা হয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অ্যাক্ট অনুযায়ী, জেনারেটিভ এআই সিস্টেমগুলোকে অবশ্যই কপিরাইট আইন মেনে চলতে হবে এবং প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহৃত উপাদানের বিষয়ে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে। উন্নত বিশ্বে ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে মেধাস্বত্ব রক্ষার বিষয়টি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।
যুক্তরাজ্যের সঙ্গীতশিল্পীরাও এআই আইনের পরিবর্তনের প্রতিবাদে একটি নীরব অ্যালবাম প্রকাশ করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এই আইন তাদের কাজের ওপর নিয়ন্ত্রণ কমিয়ে দেবে। এর আগে, প্রযুক্তি কোম্পানি থমসন রয়টার্স-এর সঙ্গে একটি আইনি লড়াইয়ে জিতেছিল একটি পুরনো আইনি গবেষণা সংস্থা। বর্তমানে, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে ভিজ্যুয়াল শিল্পী ও সংবাদ সংস্থাগুলোর এমন কিছু মামলা চলছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস