মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি কর্মচারী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা: স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন বিশেষজ্ঞদের
ওয়াশিংটন ডিসি, [আজকের তারিখ]। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি কর্মীর সংখ্যা কমানোর একটি বিতর্কিত পরিকল্পনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এই পরিকল্পনার স্বচ্ছতা এবং এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সরকারি কাজকর্মের দক্ষতা বাড়ানোর কথা বলা হলেও, অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, এই ধরনের পদক্ষেপের ফলে সরকারের কার্যকারিতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন ‘পার্টনারশিপ ফর পাবলিক সার্ভিস’-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ম্যাক্স স্টিয়ার। তিনি জানান, কর্মী ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই। এতে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। তার মতে, বর্তমান পরিস্থিতি অনেকটা ‘রেডি, এম, ফায়ার’-এর বদলে ‘ফায়ার, ফায়ার, ফায়ার’-এর মতো। অর্থাৎ, কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই কর্মী ছাঁটাই করা হচ্ছে।
স্টিয়ারের মতে, সরকারি কর্মীদের এভাবে ছাঁটাই করা জনগণের সম্পদ ধ্বংস করার সামিল। তার মতে, সরকার জনগণের সেবার জন্য, কোনো বিশেষ ব্যক্তির স্বার্থ রক্ষার জন্য নয়। তিনি অতীতের ‘স্পয়লস সিস্টেম’-এর কথা উল্লেখ করেন, যেখানে রাজনৈতিক আনুগত্যের ভিত্তিতে সরকারি চাকরি দেওয়া হতো। এর ফলস্বরূপ দুর্নীতি ও অযোগ্যতা দেখা দেয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে, সেই পুরনো পদ্ধতির পুনরাবৃত্তি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তবে, এই কর্মী ছাঁটাইয়ের কারণ হিসেবে সরকারের পক্ষ থেকে কর্মক্ষেত্রে বৈচিত্র্য (Diversity) কর্মসূচি বাতিলের কথা বলা হচ্ছে। যদিও বিশেষজ্ঞদের মতে, কর্মী ছাঁটাইয়ের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। এই ধরনের পদক্ষেপ মূলত সরকারের ক্ষমতা আরও সুসংহত করার চেষ্টা।
বিভিন্ন সরকারি দপ্তর থেকে কর্মী ছাঁটাইয়ের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে ভেটেরান্স অ্যাফেয়ার্স (ভিএ) বিভাগ, কৃষি বিভাগ (ইউএসডিএ) সহ আরও অনেক দপ্তর। এমনকি, যারা সরকারের অপচয়, দুর্নীতি ও অনিয়ম খতিয়ে দেখেন, সেই ইন্সপেক্টর জেনারেলদেরও সরিয়ে দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কর্মী ছাঁটাইয়ের ফলে সরকারের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হবে। কর্মীদের পুনর্বাসনে অতিরিক্ত অর্থ খরচ হবে, যা শেষ পর্যন্ত করদাতাদের ওপর বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। নতুন কর্মীদের প্রশিক্ষণ ও নিয়োগের পেছনে যে অর্থ খরচ হয়েছে, তাও জলে যাবে।
এক্ষেত্রে ইলন মাস্কের সংশ্লিষ্টতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, তার ব্যক্তিগত স্বার্থের সঙ্গে সরকারি সিদ্ধান্তের একটি যোগসূত্র থাকতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারের এই ধরনের পদক্ষেপ স্বচ্ছতার অভাব প্রমাণ করে। জনগণের প্রতি সরকারের দায়বদ্ধতা রয়েছে এবং এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তা প্রকাশ করা উচিত।
তথ্য সূত্র: সিএনএন