ইউক্রেন শান্তি পরিকল্পনায় যুক্ত মার্কিন কর্মকর্তার অতীতের রাশিয়া-ঘেঁষা মন্তব্যে বিতর্ক
ওয়াশিংটন, ডিসি – ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য শান্তি পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত একজন শীর্ষ কর্মকর্তার অতীতের কিছু মন্তব্য এবং তার সহযোগী হিসেবে পরিচিত ব্যক্তিদের সঙ্গে বিভিন্ন ডানপন্থী গোষ্ঠীর সংযোগ নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। জানা গেছে, ওই কর্মকর্তা অতীতে এমন কিছু মন্তব্য করেছেন যা হয় রাশিয়ার প্রতি সহানুভূতিপূর্ণ অথবা ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের নীতির সমালোচনা করে করা হয়েছে।
ওই কর্মকর্তার নাম কেইথ কেলগ। তিনি বর্তমানে ট্রাম্প প্রশাসনের হয়ে ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে শান্তি আলোচনায় সহায়তা করছেন। তবে কেলগের অতীতের কিছু মন্তব্য ও কাজের ধরন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষ করে তিনি যখন বিভিন্ন গবেষণা প্রতিবেদনে ইউক্রেনের শান্তি আলোচনায় অংশগ্রহণের বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছিলেন, তখন অনেকের মনে সন্দেহ জেগেছে। কেলগ প্রায়ই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক-শিল্প কমপ্লেক্স এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পররাষ্ট্রনীতিকে যুদ্ধের জন্য দায়ী করেছেন।
যদিও কেলগ প্রকাশ্যে রাশিয়ার কঠোর সমালোচক হিসেবে পরিচিত, তবুও তিনি একসময় বলেছিলেন যে, যুক্তরাষ্ট্রকে ইউক্রেনকে দেওয়া সামরিক সহায়তাকে শর্ত হিসেবে ব্যবহার করতে হবে, যাতে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি হয়।
কেলগের সঙ্গে কাজ করা কয়েকজন কর্মীর রাজনৈতিক আদর্শও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকে হয় কট্টর ডানপন্থী জাতীয়তাবাদী অথবা বিভিন্ন উগ্র ডানপন্থী ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। কেলগের সহযোগী হিসেবে পরিচিত গ্লোরিয়া ম্যাকডোনাল্ড অতীতে কেলগের সঙ্গে মিলে বিভিন্ন নিবন্ধ লিখেছেন। ম্যাকডোনাল্ডের লিংকডইন প্রোফাইল অনুসারে, পররাষ্ট্রনীতিতে তার তেমন কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তবে তিনি ট্রাম্পের শাসনামলে কিয়েভে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য কাজ করেছেন। কেলগের আরেক সহযোগী হলেন জ্যাক বাউডার। তিনিও কট্টর ডানপন্থী রাজনীতিক জো কেন্টের নির্বাচনী প্রচারণায় কাজ করেছেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কেলগের অতীত কর্মকাণ্ড এবং তার সহযোগীদের রাজনৈতিক আদর্শ ইউক্রেন শান্তি আলোচনাকে প্রভাবিত করতে পারে। কারণ, কেলগ অতীতে ইউক্রেনকে ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্ত করার বিরোধিতা করেছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা কমানোরও পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি মনে করেন, ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করার পরিবর্তে আলোচনার টেবিলে বসতে বাধ্য করা উচিত।
অন্যদিকে, রাশিয়ার পক্ষ থেকেও কেলগের ভূমিকার সমালোচনা করা হয়েছে। সম্প্রতি সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কেলগ এবং তার সহযোগীদের বিতর্কিত মন্তব্য ও কর্মকাণ্ড ট্রাম্প প্রশাসনের ইউক্রেন নীতি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। অনেক সমালোচকের ধারণা, ট্রাম্প প্রশাসন রাশিয়ার প্রতি কিছুটা নমনীয় হতে চাইছে এবং ইউক্রেনকে এক্ষেত্রে ছাড় দিতে প্রস্তুত।
তথ্য সূত্র: বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম