যুদ্ধ জয়ের উল্লাসে ভাটা, দর্শকশূন্যতার শঙ্কা: চেতেহ্যাম ঘোড়দৌড়ের উৎসব
যুক্তরাজ্যের চেতেহ্যামে অনুষ্ঠিত হওয়া ঐতিহ্যপূর্ণ ঘোড়দৌড় উৎসব আবারও আলোচনায়। এবারের আসরে যেমন ছিল অপ্রত্যাশিত জয়, তেমনি ছিল দর্শক-আগ্রহের অভাব। বাজিগরদের জন্য মিশ্র ফল পাওয়া গেলেও, উৎসবের আকর্ষণ ছিল চোখে পড়ার মতো।
এবারের আসরে অনেকগুলো ঘোড়ার ওপরে বাজি ধরা হয়েছিল, যাদের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি ছিল। কিন্তু ফলাফলে দেখা যায়, বাজিকরদের হতাশ করে বেশ কয়েকটি শক্তিশালী ঘোড়া হেরে গেছে। উদাহরণস্বরূপ, একটি ঘোড়ার ওপরে ৪০-এর বেশি বাজি লেগেছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটি জিততে পারেনি। অন্যদিকে, অপেক্ষাকৃত কম পরিচিত কিছু ঘোড়া অপ্রত্যাশিতভাবে জয়লাভ করে বাজিকরদের বিপুল অর্থ এনে দিয়েছে। এই অপ্রত্যাশিত জয়গুলো ঘোড়দৌড় উৎসবের উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দেয়, যা দর্শকদের কাছে খুবই প্রিয়।
তবে উৎসবের একটি বড় সমস্যা হলো দর্শকের সংখ্যা কমে যাওয়া। গত কয়েক বছর ধরেই এই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। মহামারীর আগের সময়ের তুলনায়, ২০২৩ সালের উৎসবে দর্শক উপস্থিতি প্রায় ২২ শতাংশ কমেছে। কর্তৃপক্ষের মতে, এর মূল কারণ সম্ভবত টিকিটের উচ্চ মূল্য এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ। যদিও কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে এবং ভবিষ্যতে দর্শক সংখ্যা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছে।
চেতেহ্যাম উৎসব শুধু একটি খেলা বা প্রতিযোগিতা নয়, এটি একটি বিশাল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডও বটে। এখানে বাজি ধরা একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা অনেক মানুষের রুটি-রুজির সঙ্গে জড়িত। প্রতি বছর এই উৎসবে বিপুল পরিমাণ অর্থের লেনদেন হয়, যা যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
উৎসবের আয়োজকরা জানিয়েছেন, তাঁরা দর্শকদের জন্য আরও আকর্ষণীয় কিছু করার চেষ্টা করছেন। দর্শকদের সুবিধার জন্য পানীয় পরিবেশনের স্থানে পরিবর্তন আনা হয়েছে এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী গাই ল্যাভেন্ডার জানিয়েছেন, তাঁদের মূল লক্ষ্য হলো দর্শকদের জন্য “অবিস্মরণীয় দিন” তৈরি করা।
আয়োজকদের মতে, দর্শকদের আগ্রহ ধরে রাখতে হলে খেলার মানের পাশাপাশি উৎসবের পরিবেশকেও উন্নত করতে হবে। যদিও দর্শক সংখ্যা কমার কারণ এখনো পুরোপুরি স্পষ্ট নয়, তবে কর্তৃপক্ষ মনে করে, ভবিষ্যতে এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।
এই বছর দর্শক সংখ্যা কিছুটা কম হলেও, উৎসবের আকর্ষণ কমেনি। অপ্রত্যাশিত জয় এবং বাজির উত্তেজনা দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। কর্তৃপক্ষ আশা করছে, আগামী বছরগুলোতে দর্শক সংখ্যা বাড়বে এবং চেতেহ্যাম উৎসব তার আগের জৌলুস ফিরে পাবে।
তথ্যসূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম।