পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে অন্তত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে সামরিক বাহিনীর অভিযানে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
খবর অনুযায়ী, নিরাপত্তা বাহিনী জঙ্গিদের দুইটি আস্তানায় অভিযান চালায়, যার ফলস্বরূপ বন্দুকযুদ্ধে দুই সেনা সদস্য এবং নয় জন জঙ্গি নিহত হয়।
খাইবার পাখতুনখাওয়ার মোহামন্দ এবং ডেরা ইসমাইল খান জেলায় এই অভিযানগুলো চালানো হয়।
এই প্রদেশটি আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী এলাকা।
স্থানীয় পুলিশের মতে, নিহত জঙ্গিরা তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর সদস্য ছিল।
টিটিপি, যা পাকিস্তানি তালিবান নামেও পরিচিত, একটি নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন।
যদিও তারা আলাদা, তবে আফগান তালিবানের মিত্র হিসেবে পরিচিত।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের আগস্ট মাসে যখন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য ন্যাটো বাহিনী আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করছিল, সেই সময় আফগান তালিবান পুনরায় ক্ষমতা দখল করে।
আফগান তালিবানের ক্ষমতা দখলের পর অনেক টিটিপি নেতা ও জঙ্গি সেখানে আশ্রয় নিয়েছে এবং প্রকাশ্যে বসবাস করছে।
এর ফলে পাকিস্তানি তালিবানও উৎসাহিত হয়েছে।
আলাদা একটি ঘটনায়, শনিবার নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানের কুরুম জেলায় হামলা হয়।
কুরুম জেলাটিও আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী।
স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, ওই হামলায় হতাহতের কোনো খবর এখনো পাওয়া যায়নি।
কুরুম এমন একটি এলাকা, যেখানে দীর্ঘদিন ধরে সুন্নি ও শিয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে সহিংসতা চলে আসছে।
সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘর্ষের কারণে এখানে বহু মানুষ নিহত হয়েছে, যা এই অঞ্চলের উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
নভেম্বর মাস থেকে কুরুম কার্যত বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে।
সাম্প্রদায়িক সহিংসতার জেরে কর্তৃপক্ষ সেখানকার প্রধান সড়কগুলো বন্ধ করে দেয়।
এর ফলে সেখানে ওষুধ ও খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে, যা মানবিক সংকটকে আরও গভীর করে তুলেছে।
শনিবার পেশোয়ার শহরে একটি মসজিদের বাইরে বোমা হামলায় এক মুসলিম নেতার মৃত্যু হয়েছে।
কারা এই হামলার সঙ্গে জড়িত, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের এই ঘটনাগুলো আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগজনক।
বিশেষ করে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি এবং টিটিপির মতো জঙ্গি সংগঠনগুলোর তৎপরতা এই অঞ্চলে অস্থিরতা তৈরি করছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা