আলোচিত হলিউড অভিনেতা জোনাথন মেজর্স, যিনি সম্প্রতি গার্হস্থ্য সহিংসতার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছিলেন, তাঁর প্রাক্তন প্রেমিকা গ্রেস জাব্বারির সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি অডিও ক্লিপে শোনা যাচ্ছে, মেজর্স স্বীকার করছেন যে তিনি জাব্বারির প্রতি “আগ্রাসী” ছিলেন।
রোলিং স্টোন ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হওয়া এই অডিও ক্লিপটি তৈরি হয়েছিল ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে। জানা যায়, সেসময় মেজর্স এবং জাব্বারি লন্ডনে থাকতেন, যখন মেজর্স “লকি” সিরিজের দ্বিতীয় সিজনের শুটিং করছিলেন। অডিও ক্লিপটিতে, মেজর্সকে বলতে শোনা যায়, “আমি লজ্জিত যে আমি কখনো…” তবে তিনি কথাটি শেষ করেননি।
এরপর তিনি বলেন, “আমি আগে কখনো কোনো নারীর প্রতি আগ্রাসী হইনি। আমি তোমাকে আঘাত করেছি।” জবাবে, জাব্বারীকে বলতে শোনা যায়, “তুমি আমাকে শ্বাসরোধ করেছিলে এবং গাড়ির সাথে ধাক্কা মেরেছিলে।”
মেজর্স এর উত্তরে বলেন, “হ্যাঁ, ঐগুলো ‘আক্রমণ’-এর মধ্যে পরে, হ্যাঁ। আমার সাথে এমনটা আগে কখনো হয়নি।” এর আগে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে, মেজর্সকে তার প্রাক্তন প্রেমিকার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
এই ঘটনা ঘটেছিল মার্চ মাসে। আদালত তাকে একটি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে, এবং অন্য একটি অভিযোগ থেকে মুক্তি দেয়। পরে তাকে প্রবেশন দেওয়া হয় এবং এক বছরের জন্য গার্হস্থ্য সহিংসতা প্রতিরোধ প্রোগ্রামে অংশ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
আদালতের রায়ের পর, মার্ভেল স্টুডিও জানায় যে তারা মেজর্সের সাথে তাদের ভবিষ্যৎ কোনো প্রকল্পে কাজ করবে না। মেজর্সকে ২০২৩ সালের “অ্যাভেঞ্জার্স: দ্য কাং ডাইনেস্টি” ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করার কথা ছিল, তবে এই ঘটনার পর তাকে বাদ দেওয়া হয়।
ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন জাব্বারি, মেজর্সের বাড়িতে তার এক বন্ধুকে নিয়ে আসেন। এরপর মেজর্স রেগে যান এবং তাদের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। জাব্বারির করা অভিযোগ অনুযায়ী, মেজর্স তার সাথে শারীরিক ও মৌখিকভাবে দুর্ব্যবহার করেন।
এই ঘটনার পরে, জাব্বারি নিউইয়র্কের একটি ফেডারেল আদালতে মেজর্সের বিরুদ্ধে একটি দেওয়ানি মামলা করেন। মামলায় তিনি শারীরিক নির্যাতন, মানসিক আঘাত এবং মানহানির অভিযোগ আনেন। এই মামলার নিষ্পত্তি হয় ২০২৪ সালের নভেম্বরে।
মেজর্স অবশ্য শুরু থেকেই তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এমনকি, তিনি একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে তিনি জাব্বারীর শরীরে আঘাত করেননি, বরং তার “হৃদয়ে” আঘাত করেছেন।
হলিউডে নিজের ক্যারিয়ার পুনর্গঠনের চেষ্টা করা মেজর্সের জন্য এই অডিও ক্লিপ নতুন করে উদ্বেগের কারণ হয়েছে। সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া তার নতুন সিনেমা “ম্যাগাজিন ড্রিমস”-এর প্রচারণার মধ্যেই এই বিতর্ক সৃষ্টি হলো।
গার্হস্থ্য সহিংসতার এই ঘটনা বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মানুষের জীবনে গভীর প্রভাব ফেলে। বাংলাদেশেও এই ধরনের ঘটনার শিকার হওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। সমাজের এই দিকটি নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং ভুক্তভোগীদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা জরুরি।
তথ্যসূত্র: সিএনএন