লন্ডন হিথ্রো বিমানবন্দরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের জেরে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দেওয়ায় বিমান চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার সকালে এই ঘটনার পর হাজার হাজার যাত্রী চরম দুর্ভোগে পড়েছেন, বাতিল হয়েছে কয়েক’শ ফ্লাইট।
বিমানবন্দরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, স্থানীয় সময় শুক্রবার গভীর রাত পর্যন্ত বিমানবন্দরটি বন্ধ থাকবে।
জানা গেছে, হিথ্রো বিমানবন্দরের কাছে একটি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের (সাবস্টেশন) আগুন লাগে। এর ফলে বিমানবন্দরের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
বিমানবন্দরের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, “যাত্রী ও কর্মীদের নিরাপত্তা বিবেচনায় ২১ মার্চ মধ্যরাত পর্যন্ত হিথ্রো বিমানবন্দর বন্ধ থাকবে। যাত্রীদের বিমানবন্দরে যেতে নিষেধ করা হচ্ছে এবং পরবর্তী তথ্যের জন্য নিজ নিজ বিমান সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।”
হিথ্রো বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত বিমানবন্দর, যেখানে প্রতিদিন প্রায় ১,৩০০ ফ্লাইট চলাচল করে। এই ঘটনার কারণে ইতিমধ্যেই এক হাজার তিনশ’র বেশি ফ্লাইট বাতিল অথবা বিলম্বিত হয়েছে।
অনেক ফ্লাইটকে নিকটবর্তী অন্যান্য বিমানবন্দরে, যেমন- আমস্টারডামের স্কিপোল, ফ্রাঙ্কফুর্ট, ম্যানচেস্টার এবং ডাবলিনে অবতরণ করতে বাধ্য করা হয়েছে।
ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ সহ বিভিন্ন বিমান সংস্থা তাদের যাত্রীদের হিথ্রোর উদ্দেশ্যে যাত্রা না করার জন্য সতর্ক করেছে। বিমানবন্দরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে কয়েকদিন সময় লাগতে পারে।
এই ঘটনার ফলে যারা বিমানবন্দরে আটকা পড়েছেন, তাদের মধ্যে অনেকেরই অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তারা তেমন কোনো সহযোগিতা পাননি।
সাধারণত, হিথ্রো বিমানবন্দর দিয়ে বছরে প্রায় ৬ কোটি ৭০ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করেন। শুধু ২০২২ সালেই এই সংখ্যা ছিল ৮ কোটির বেশি।
বিমানবন্দরের এই অচলাবস্থা বিশ্বজুড়ে বিমানযাত্রীদের ওপর প্রভাব ফেলেছে, যা বাংলাদেশি যাত্রীদের জন্যও উদ্বেগের কারণ। যারা লন্ডন হয়ে অন্য কোনো গন্তব্যে যাওয়ার কথা ছিল, তাদের অনেকেই এখন অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন।
বিমানবন্দরে আটকে পড়া যাত্রীদের মধ্যে অনেকে তাদের টিকিটের রিফান্ডের জন্য আবেদন করছেন।
এদিকে, দমকল কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে আগুন লাগার কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। তদন্তকারীরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা