যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ বিষয়ক নীতিমালায় কড়াকড়ি আরোপের কারণে দেশটির পর্যটন শিল্পে বড় ধরনের ধাক্কা লাগতে পারে। সম্প্রতি বিভিন্ন দেশ থেকে আসা পর্যটকদের আটকের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় পর্যটকদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, অনেক দেশ তাদের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিচ্ছে। পর্যটন বিষয়ক অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বছর যুক্তরাষ্ট্রে পর্যটকদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমতে পারে, যা দেশটির অর্থনীতিতে প্রায় ৬৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তগুলোতে সম্প্রতি ভ্রমণকারীদের আটকের ঘটনা বেড়েছে। এর মধ্যে উন্নত দেশগুলো, যেমন – জার্মানি, যুক্তরাজ্য এবং কানাডার নাগরিকেরাও রয়েছেন।
এমনকি, বৈধ ভিসা ও গ্রিন কার্ড (যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের অনুমতিপত্র) থাকা সত্ত্বেও অনেককে আটক করা হয়েছে। জার্মানি তাদের নাগরিকদের জন্য ভ্রমণ নির্দেশিকা হালনাগাদ করেছে এবং জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন আইন ভাঙলে শুধু প্রত্যাখ্যাত হওয়া নয়, গ্রেপ্তার ও আটকের মতো ঘটনাও ঘটতে পারে।
যুক্তরাজ্য সরকারও তাদের নাগরিকদের জন্য সতর্কবার্তা জারি করেছে। জানা গেছে, যুক্তরাজ্যের ‘ইউকে সাবস’ নামের একটি পাঙ্ক ব্যান্ডের সদস্যদের লস অ্যাঞ্জেলেস বিমানবন্দরে নামার পর আটক করা হয়।
কানাডার পক্ষ থেকেও উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে। দেশটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, সীমান্তে হয়রানির শিকার হওয়া এক কানাডীয় অভিনেত্রী জানিয়েছেন, তাকে হাতকড়া পরিয়ে অন্য রাজ্যে একটি ডিটেনশন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, যেখানে তিনি অমানবিক পরিবেশে কয়েক সপ্তাহ কাটিয়েছেন।
এছাড়া, ডেনমার্ক ও ফিনল্যান্ড তাদের নাগরিকদের, বিশেষ করে যারা পাসপোর্ট-এ ‘X’ লিঙ্গ ব্যবহার করেন, তাদের জন্য বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে। কারণ, ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির কারণে এখন যুক্তরাষ্ট্রে কেবল দুটি লিঙ্গকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
পরিস্থিতির নাটকীয় পরিবর্তন হয়েছে। শুল্ক নীতির পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন বিষয়ক কঠোর মনোভাবের কারণে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে যেতে পারে।”
সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার এবং অভিবাসন নীতি কঠোর করার কারণে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে আগ্রহ হারাচ্ছেন পর্যটকেরা।
যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতির কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশটির প্রতিবেশী দেশ কানাডা। কানাডার সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি মাসে সীমান্ত দিয়ে সড়কপথে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা কানাডীয়দের সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় ২৩ শতাংশ কমেছে।
এছাড়া, আকাশপথে যাত্রী চলাচলও ১৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। পরিস্থিতি যদি এমন চলতে থাকে, তবে তা যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান