ইংল্যান্ডের আক্রমণভাগে র্যাশফোর্ডের গুরুত্ব: কেন পালমার ও সাকার চেয়েও তিনি গুরুত্বপূর্ণ?
ফুটবল বিশ্বে আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলি নিয়ে আলোচনা সবসময়ই একটি বিশেষ ধাঁচ অনুসরণ করে। বাছাইপর্বের ম্যাচগুলো মূলত দলগুলোর জন্য বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জনের একটা ধাপ মাত্র। সম্প্রতি, ইংল্যান্ড তাদের বাছাইপর্বের ম্যাচে আলবেনিয়ার বিরুদ্ধে জয়লাভ করেছে, যা পুরনো ধাঁচের খেলারই পুনরাবৃত্তি ছিল।
এই ম্যাচে ইংল্যান্ড বল দখলে রাখলেও, আক্রমণের গতি ছিল খুবই কম এবং তারা সামান্য ব্যবধানে জয়ী হয়। তবে, এই জয়ের ফল বিশ্বকাপের জন্য খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নাও হতে পারে।
আসন্ন বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড ভালো ফল করতে চায়। তাদের দল সে সামর্থ্য রাখে। তবে, মূল চ্যালেঞ্জটা আসবে যখন তারা আর্জেন্টিনা, স্পেন বা ফ্রান্সের মতো শক্তিশালী দলের মুখোমুখি হবে।
এইসব দলের খেলোয়াড়দের দক্ষতা ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়দের থেকে হয়তো বেশি হবে এবং তাদের সঙ্গেই ভালো খেলতে পারলেই ইংল্যান্ডের সাফল্য নিশ্চিত হবে।
ইংল্যান্ডের বর্তমান ম্যানেজারের প্রধান কাজ হল— নিশ্চিত করা যেন তারা বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে, কারণ সার্বিয়া ও আলবেনিয়ার মতো দলের বিরুদ্ধে তাদের কঠিন চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করতে হবে। একই সাথে, বিশ্বকাপের মূল পর্বে ভালো খেলার জন্য শক্তিশালী দল তৈরি করাটাও জরুরি।
মাঠের অনুশীলনে কৌশলগত দিকগুলো নিয়ে কাজ করতে হয়, যা সাধারণত সবার দৃষ্টির বাইরে থাকে। দলের জন্য একটি সুস্পষ্ট পরিকল্পনা থাকা দরকার এবং খেলোয়াড়দের পারফর্মেন্সের ওপর ভিত্তি করে সেই পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনা যেতে পারে।
ইংল্যান্ডের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল হ্যারি কেইনকে কিভাবে ব্যবহার করা হবে। কেইনের খেলার ধরনটা এমন যে তিনি গভীর থেকে নিচে নেমে এসে বল পায়ে রাখতে পছন্দ করেন, যা প্রতিপক্ষের রক্ষণকে বিভ্রান্ত করতে সহায়ক।
তবে, এই সুযোগটা কাজে লাগাতে হলে কেইনের আশেপাশে এমন খেলোয়াড় থাকতে হবে যারা তার তৈরি করা ফাঁকা জায়গায় দৌড়তে পারে। ইউরোর (ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপ) সময় ইংল্যান্ডের খেলায় এই ধরনের সমন্বয় দেখা যায়নি, কারণ জুড বেলিংহাম, ফিল ফোডেন এবং বুকায়ো সাকা— এরা সবাই কেইনের কাছাকাছি খেলছিলেন, ফলে কেইনকে কেন্দ্র করে আক্রমণগুলো সেভাবে তৈরি হয়নি।
অন্যদিকে, মার্কাস র্যাশফোর্ডকে যদি বিবেচনা করা হয়, তবে তার খেলার ধরন কেইনের জন্য খুবই উপযোগী। র্যাশফোর্ড একজন দ্রুতগতির খেলোয়াড় এবং তিনি কেইনের পেছনে ফাঁকা জায়গায় দৌড়াতে পারেন। যদিও র্যাশফোর্ডের কারিগরি দক্ষতা কোল পালমার বা সাকার মতো নয়, অথবা ফোডেনের মতো ট্যাকটিক্যাল জ্ঞানও তার নেই, তবে কেইনের সাথে তার খেলার ধরন ইংল্যান্ডের আক্রমণকে আরও কার্যকর করে তুলতে পারে।
আলবেনিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে কেইন যখন নিচে নেমে এসে বল বাড়িয়েছিলেন, তখন তিনজন ইংলিশ খেলোয়াড় তার পাশ দিয়ে দৌড়ে যান এবং কেইন সেই মুহূর্তে র্যাশফোর্ডের দিকে পাস বাড়ান। র্যাশফোর্ড বল নিয়ন্ত্রণে নিতে কিছুটা সময় নিলেও, এই ধরনের আক্রমণ তৈরির সম্ভাবনা দেখা গিয়েছিল। র্যাশফোর্ডের এই বৈশিষ্ট্য ইংল্যান্ড দলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান